চলতি বর্ষণে ভবদহ অঞ্চলের শতশত মৎস্যঘের পনিতে প্লাবিত, শত কোটির ক্ষতির শঙ্কা
প্রিয়ব্রত ধর,নওয়াপাড়া যশোর প্রতিনিধিঃ
হোয়াংহো নদীকে বলা হয় চীনের দুঃখ। আর ভবদহকে বলা হয় যশোরের দুংখ।
গত চারদিনের থেমে থেমে হালকা, মাঝারী ও ভারিবর্ষণে ভবদহ অঞ্চল জলাবদ্ধায় রুপ নিয়েছে। বরাবর এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা থাকলেও চলতি বর্ষণে তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত কয়দিনে বিলে পানি বেড়েছে প্রায় ২ ফিট। অনেক ঘের এখন পনির তলে। বাড়িতে শুরু হয়েছে পানি ওঠা, স্কুল-কলেজ মাঠে জমছে পানি।
বর্ষণে ভবদহ এলাকার বিল কেদারিয়া ও বিল বোকড় এলাকায প্রায় 2 ফিট রেকর্ড পরিমান পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবদহের সেচ পাম্প সর্ব সময় সচল থাকা সত্বেও এই হঠাৎ জলবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনেকের আশংকা জলাবদ্ধতা প্রবল আকার ধারণ করতে পারে। কারন, যশোর সদর, বিল হরিণাসহ আরো ৫টি বিলের পানি গড়িয়ে আসছে ধীরে ধীরে ভবদহের দিকে কিন্তু সে পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
অত্র এলাকার অপেক্ষাকৃত নিচু বাড়িঘরের উঠান এখন পানিবন্দী।
জলাবদ্ধ এলাকা হওয়াই এ অঞ্চলেন মানুষের প্রধান পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে মৎস্য চাষ কিন্তু রাতে এ পানি বৃদ্ধি পাওয়াই তাদের মৎস্য ঘেরের ভেড়ি তলিয়ে গিয়েছে। ডুমুরতলা গ্রামের শিব পদ বিশ্বাস বলেন, আমাদের প্রায় সব মৎস্য ঘের পানির নিচে, আমাদের মৎস্য প্রকল্পে এবার কয়েক কোটি টাকা লোকসান হবে। আমরা পথে বসবো।
ইতিমধ্যে চোখে পড়ছে চাষিরা তাদের মৎস্য ঘেরে নেট পাটা দিতে ব্যাস্ত সময় পার করছে। ভেড়িতে কোনো রকমে নেট ব্যবহার করে মাছ নিজ ঘেরে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায় অপেক্ষাকৃত নিচু বাড়িগুলো এখন পানি ছুই ছুই। অল্প পানি বাড়লেইতা ঘরে প্রবেশ করবে। এমনঅবস্থায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। মৎস্য খামারগুলো পানির নিচে,ঘেরের পাড়ে ছিল ১২ মাসিক নানা সবজির চাষ,তবে তা আজ সবই পানির নিচে।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় ভবদহে অব্যাবস্থাপনার কারণে এ পরিণতি। ভবদহ গেটে বাঁধ প্রদান করে কয়েকবছর সেচের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করার চেষ্টায় আরো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষক।ওইটুকু সেচে কিভাবে এত বড় জলাবদ্ধতার সমাধান হবে তা তাদের বুজে আসে না। বলছিলেন ভবদহ পাড়ের মানুষ ও স্থায়ী ভুক্ত ভোগীরা। তারা আশঙ্কা করছেন বর্ষায় শত কোটি টাকার লোকসান হবে অত্র অঞ্চলের মৎস্য চাষীদের।
অভয়নগর উপজেলা মৎস্য অফিসার আমিনুল হক বলেন আমরা মাঠ পর্যায় কাজ করছি, ইতিমধ্যে বেশির ভাগ মৎস্য ঘের পানির নিচে। কীভাবে নেট পাটা ব্যবহার করে মাছ আটকানো যায়, কীভাবে খাওয়ার ব্যবহার করলে মাছ থাকবে। সেটা আমরা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনো আমরা সনাক্ত করে পারিনাই। তবে প্রচুর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রণজিৎ বাওয়ালী জানান, কিসের সেচ? এটাতো লোক দেখানো মাত্র,৫২ বিলের পানি কি আর সেচের মাধ্যমে সমাধান হয়। দরকার টি আর এম প্রকল্প চালু করা। তা হলেই মিলতে পারে মুক্তি। অন্যথায় জলাভুমিতে পরিণত হবে ভবদহ অঞ্চল।