
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
মনিরামপুরে করোনা জয়ী স্বাস্থ্যকর্মী সাধনা রানী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়নি। তার পাওনা ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার জন্য দুই সহকর্মীসহ তিনজন মিলে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে কানাঘুষা চলছে। পরে তাকে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বলে প্রচার চালানো হয়। এমন অভিযোগে আদালতে একটি হত্যা মামলা হওয়ার পর ঘটনার ক্লু বের হতে চলেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, বাগেরহাটের শরণখোলার রাজাপুর গ্রামের মৃত. কমলেশ চন্দ্র হালদারের স্ত্রী সাধনা রানী মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরির সুবাদে একই পদের সহকর্মী ইসমাইল হোসেন ও জাহিদের সাথে তার সু-সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালে ইসমাইল ও জাহিদ কুপরামর্শ করে ব্যবসার কথা বলে সাধনার নিকট থেকে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ইসমাইলের আপন ভগ্নিপতি মিজানুর রহমানকে দেয়।
৩ মাসের মধ্যে ধারের টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও মিজানুর টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। ভূয়া এসপি পরিচয়দানকারী মিজানুর ধারের ২ লাখ টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকা দ্রুত পরিশোধ করবেন বলে অঙ্গীকারনামা করেন। ইসমাইল ও মিজানুর পরিকল্পনা করে ২০২০ সালের ৬ জুন ধারের টাকা দেয়ার কথা বলে জাহিদ নামে একজনের মোটরসাইকেলে করে সাধনা রানিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পরিকল্পিতভাবে মনিরামপুর-কেশবপুর সড়কের রাস্তার যে কোনো জায়গায় সাধনা রানিকে মাথায় আঘাত করে জখম করা হয়। পরে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে প্রচার করে তারা।
এছাড়া তারা পরিকল্পিতভাবে যশোর ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে খুলনার গাজী মেডিকেলে ভর্তি করেন সাধনাকে। এমনকি রহস্যকজনক কারনেই সাধনার মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে দেয়া হয়নি। পাওনা টাকা না দিতে সাধনা রানিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে গত ২ ফেব্রুয়ারী আদালতের দায়ের করা মামলায়ও তা উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন নিহতের মেয়ে সাথী পাল। মামলার আসামিরা হলেন, মরিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নি গ্রামের মৃত. ছামাদ বিশ্বাসের ছেলে মিজানুর রহমান, বাঙ্গালীপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন ও চন্ডিপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে জাহিদ হোসেন।
যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসু বিষয়টি আমলে নিয়ে মনিরামপুর থানায় এ সংক্রান্ত কোনো মামলা হয়েছে কিনা সেই ব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দিতে অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে আদেশ দিয়েছেন ।