Type to search

২ বছর ধরে ভাঙ্গা সেতুতে ঝুকি নিয়ে চলছে পারাপার

নড়াইল

২ বছর ধরে ভাঙ্গা সেতুতে ঝুকি নিয়ে চলছে পারাপার

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল ও মাগুরা জেলার সংযোগ সড়কের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু লোহাগড়া
উপজেলার লাহুড়িয়ার ঝামারঘোপ খালের উপর নির্মিত ঝামারঘোপ সেতু। কিন্তু দুই
বছর আগে সেতুটির মাঝখানে ভেঙ্গে চলাচলের অনুপোযোগী হয় পড়লেও কর্তৃপক্ষের
উদাসীনতায় কোন সংস্কার হয়নি।
ফলে প্রতিদিনই আতঙ্ক আর ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ। প্রতিনিয়ত
দূর্ঘটনার মধ্যেই জমির ধান নেয়া, সাধারন পথচারীদের চলাচল আর স্কুল কলেজে
যাওয়া আসা করছে এলাকাবাসী। যে কোন সময় সেতুটি ভেঙ্গে বা ধ্বসে পড়ে
প্রাণহানি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে সেতুর একপ্রান্তে অর্ধেক জায়গা জুড়ে
ধ্বসে যেতে থাকে। ধীরে ধীরে পুরো জায়গায় গর্ত হয়ে ভিতরের রড বের হয়ে পড়ে।
দুই বছর আগে একটি ট্রাক চলতে গিয়ে হেলে পড়ে সেতুটি। এরপর স্থানীয় লোকেরা
গর্ত হওয়া স্থানে কয়েকটি কাঠের বড় তক্তা দিয়ে ইজিবাইক, ভ্যান আর কৃষিপন্য
ঘোড়ার গাড়িতে পারাপার করছেন। নসিমন আর ভটভটি চললে কাপতে খাকে সেতুটি,
তবুও বাধ্য হয়েই চলছে পারাপার ।
সেতুর তলদেশের অবস্থা আরো করুন। ইটের উপর দাড়িয়ে থাকা সেতুর নীচের দুটো
গার্ডার এর একটি ধ্বসে একদিকে হেলে পড়েছে। পিলারের ইটগুলো খুলে সেখানে
পাখির বাসা তৈরী হয়ে তাও খসে পড়ছে।
স্থানীয় কৃষক রহমত আলী জানান, এপাশের জমির ধান কেটে ঘোড়ারগাড়ি করে বাড়িতে
নিতে হয়। প্রতিদিনই ছোটখাট দূর্ঘটনা ঘটে। ভয় লাগে কখন জানি ব্রীজ ভেঙ্গে
নিচে পড়ে যাই, তবুও যেতে হয়।
খলিশাখালি গ্রামের ব্যবসায়ী আকবর মৃধা বলেন, এই ব্রীজ ভাঙ্গা থাকার কারনে
আমাদের মিঠাপুর হাটে যেতে গেলে নোহাটা ঘুরে ৮ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে
যেতে হয়। আমাদের এই দূর্দশা কেউ দেখে না।
স্থানীয় যুবক ইসলাম বলেন, আমরা নিজেরাই চলাচলের জন্য কাঠ দিয়েছি,
চেয়ারম্যান আর এলাকার বড় নেতাদের জানানো হয়েছে। কেউ কোন খেয়ালই করেন না
এদিকে। আমাদের কোন নেতা আছে বলে তো মনে হয় না।
ঝামারঘোপ গ্রামের খলিশাখালী প্রাইমারী স্কুলের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র বিল্টু
দাস জানায়, আমরা ভয়ে ভয়ে ব্রীজ পার হয়ে স্কুলে যাই। অনেক সময় ভ্যান যেতে
চায় না তাই হেটেও যেতে হয়।
জন প্রতিনিধিরা খোঁজ রাখেন না এমন প্রশ্নের জবাবে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ
চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সিকদার হান্নান রুনু বলেন,
এটা খুবই ঝুকিপূর্ন অবস্থায় আছে। আমরাতো সকলকে জানিয়েছি। আর সরকারী কাজতো
কচ্ছপ গতিতে চলে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের
উদ্যোগে ঝামারঘোপ খালের উপর নির্মিত হয় ১৩ মিটার দৈর্ঘের ছোট্ট এই
সেতুটি। স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ ঝুকিপূর্ন সেতুটি ঘুরে দেখেছেন,
ছবি তুলে বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছেন।
সেতুর ঝুকির কথা স্বীকার করে এলজিইডি লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী কাজী আবু
সাঈদ মোঃ জসীম বলেন, আমরা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলাম কিন্ত চেয়ারম্যান সহ
স্থানীয়দের চাহিদায় ধান মৌসুম পর্যন্ত রাখা হবে। প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে
নতুন ব্রীজ হতে সময় লাগবে।