Type to search

স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ : ফিরে দেখা একাত্তর- বিলাল মাহিনী

অন্যান্য

স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ : ফিরে দেখা একাত্তর- বিলাল মাহিনী

স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ : ফিরে দেখা একাত্তর
বিলাল মাহিনী

ইতিহাস চিরকাল কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত-আন্দোলিত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ বা আশীর্বাদ স্বরূপ। তেমনি একটি দিন ৩ মার্চ ১৯৭১।

১৯৭১ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজকের এই দিনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের সভা থেকে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের চার নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহণ করেন।

তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল ছাত্র জনসভা। এ সভায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ পাঠ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার। আর এ ইশতেহারে বলা হয়- ‘৫৪ হাজার ৫০৬ বর্গ মাইল বিস্তৃত ভৌগোলিক এলাকার সাত কোটি মানুষের জন্য আবাসভূমি হিসেবে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাম ‘বাংলাদেশ’।

ইশতিহারে তিন দফা দাবি তোলা হয়।
১. স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে পৃথিবীর বুকে একটি বলিষ্ঠ বাঙালি জাতি সৃষ্টি ও বাঙালির ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি বিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে অঞ্চলে অঞ্চলে, ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বৈষম্য নিরসনকল্পে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করে কৃষক শ্রমিক রাজনীতি কায়েম করতে হবে।
৩. স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে ব্যক্তি, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ নির্ভেজাল গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে।

স্বাধীনতার ইশতিহারে বর্ণিত দাবি অনুযায়ী একটি স্বাধীন দেশ আমরা পেলেও আজও বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পরিপূর্ণভাবে পেয়েছে কি জনগণ? প্রশ্ন সচেতন বোদ্ধাদের। এছাড়াও মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক সম্মান ও সামাজিক ন্যায় বিচার তথা সুশাসন আজও আলোর মুখ দেখেনি। আজও মানুষ দরিদ্রপীড়িত। অসহায়।

৩ মার্চের ওই জনসভাতেই ঘোষণা আসে ৭ মার্চে রেসকোর্সের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সেই ঐতিহাসিক জনসভার। যে সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতির মহান পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তবে অবস্থা আয়ত্বে আনার জন্য ওইদিনই পাকিস্তান সরকার জারি করে সান্ধ্য আইন। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই অব্যাহত থাকে জনতার বিক্ষোভ ও মিছিল।

এছাড়াও এদিন (০৩ মার্চ ১৯৭১) বাংলার মাটি শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয়। চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর গুলিতে ৭১ জন নিহত হন। সারাদেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এছাড়াও এদিন (০৩ মার্চ ১৯৭১) বাংলার মাটি শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয়। চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর গুলিতে ৭১ জন নিহত হন। সারাদেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ৩ মার্চ ১৯৭২ বাংলাদেশ রাইফেলস প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৮ সালের এই দিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধের নকশা অনুমোদন।

বিলাল হোসেন মাহিনী
নির্বাহী সম্পাদক : ভৈরব সংস্কৃতি কেন্দ্র ও
যুগ্ম সম্পাদক : ভৈরব চিত্রা রিপোর্টার্স ইউনিটি, অভয়নগর, যশোর।
[email protected]

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *