Type to search

সুনামগঞ্জে সরকারি ঘর পাচ্ছে না ৪৬০ গৃহহীন পরিবার

জেলার সংবাদ

সুনামগঞ্জে সরকারি ঘর পাচ্ছে না ৪৬০ গৃহহীন পরিবার

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার একেবারে প্রত্যন্ত উপজেলা শাল্লার চার ইউনিয়নের জন্য ১৬০০ ঘর বরাদ্দ হয়েছিল। উপজেলার শাল্লা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় ১০০ আশ্রয়হীনের জন্য নতুন গ্রাম ‘মুজিবনগর’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই উপজেলায় যাতে আশ্রয়হীন না থাকে সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন জেলা প্রশাসন।

কিন্তু ঘর তৈরির দায়িত্ব পালনকারীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ওই উপজেলা থেকে ৪৬০ ঘর জেলার অন্য উপজেলায় সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, শাল্লায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রদান নিয়ে কিছু এলাকায় আর্থিক লেনদেন হয়েছে, এমন তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু গোয়েন্দা সংস্থাও এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এজন্য ক্ষুব্ধ হয়েছেন সুনামগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক।

তিনি শাল্লা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের জানিয়ে দিয়েছেন, ওই উপজেলার ৪৬০ ঘর কেটে অন্য উপজেলার আশ্রয়হীনদের দেওয়া হবে।

শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘর তৈরি করতে অনিয়ম হয়ে থাকলে, কোথায় কোথায় অনিয়ম হয়েছে নিশ্চয়ই গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও জানেন। আমার ইউনিয়নে কোনো অনিয়ম হয়নি। আমার ইউনিয়নে ১০০ আশ্রয়হীনের জন্য নতুন গ্রাম ‘মুজিবনগর’ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমার দাবি থাকবে এসব ঘর যেন কাটা না হয়। আমার ইউনিয়নে ঘর কমানোর জন্য আগামীকাল দায়িত্বশীলরা ওখানে আসবেন বলে আমাকে জানানো হয়েছে, আমি বলেছি আমি কারও ঘর কমাতে পারবো না’।

উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের আশ্রয়হীনদের মালামাল কেনা কাটার দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মামুনুর রহমান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বাস্তবায়নের সুবিধার্থে উপজেলার চার ইউনিয়ন থেকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৪৬০ ঘর কেটে নেওয়ার কথা শুনেছি আমি, কীভাবে কোনো ইউনিয়ন থেকে কাদের ঘর কাটা হবে জানি না আমি।

শাল্লা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলামিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ঘর তৈরি করতে সকল স্থানে অনিয়ম হয়নি। আমাকে জেলা প্রশাসক জানিয়ে দিয়েছেন, শাল্লার ৪৬০টি ঘর কেটে নেওয়া হবে। আমার অনুরোধ হলো, যারা অনিয়ম করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। ঘর কাটলে দরিদ্র মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এই বিষয়ে কথা বলার জন্য শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য যুক্ত করা যায়নি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, শাল্লার কোনো কোনো স্থানে ঘর তৈরিতে আর্থিক লেনদেন হয়েছে, এমন তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় একারণে ক্ষুব্ধ। তিনি বলেছেন, ওই উপজেলা থেকে চারশ’র মতো ঘর অন্য উপজেলাগুলোর আশ্রয়হীনদের মধ্যে ভাগ করে দিতে এবং এক্ষেত্রে কোনো অনিয়মই সহ্য করা হবে না।

প্রসঙ্গত, শাল্লায় দরিদ্র আশ্রয়হীনরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেতে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে এমন সংবাদ মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে জাগো নিউজে ছাপা হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার থেকে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী একাধিক সংস্থা জেলার তিন হাজার ৯০৮টি আশ্রয়হীন পরিবারের ঘর তৈরিতে কোথাও কোনো অনিয়ম হচ্ছে কী না খোঁজ নিচ্ছে।

পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আশ্রয়হীনদের ঘর প্রদানে রাষ্ট্রীয় বিষয় যুক্ত এজন্য পুলিশ খোঁজ খবর নিচ্ছে। সূত্র, jagonews24.com