Type to search

শীতকালীন সবজিতে ভাগ্য বদল চেষ্টা বগুড়ার চাষিদের

কৃষি

শীতকালীন সবজিতে ভাগ্য বদল চেষ্টা বগুড়ার চাষিদের

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স

ডেস্ক রিপোর্ট: বগুড়ায় রবি মৌসুমের শীতকালীন সবজি চাষ করে কমবেশি লাভবান হয় এ জেলার চাষিরা। যা অন্য সময় চাষ করলেও হয় না বলা যায়।

এ কারণে প্রতিবছর ভাগ্য বদলের চেষ্টায় আগামজাতের শীতকালীন সবজি চাষে ঝুঁকছেন তারা।

শনিবার (৭ নভেম্বর) জেলার কয়েকটি উপজেলায় বিভিন্ন সবজিক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, রবি বা শীত মৌসুমের শীতকালীন সবজি নিয়ে চাষিদের ব্যস্ততা।

বগুড়ার ১২টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলা, গাবতলী, শাজাহানপুর, শেরপুর ও শিবগঞ্জ সবজি চাষের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এসব উপজেলায় বছরজুড়েই রকমারি সবজি ফলান চাষিরা। এরমধ্যে শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় সবজি চাষের পাশাপাশি উৎপাদন করা হয় সবজির চারা। নির্দিষ্ট অঞ্চল ছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও কমবেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শীত পুরোপুরিভাবে না এলেও শীতকালীন সবজিতে ভরে উঠেছে মাঠ। অনেক চাষি ক্ষেতের সবজি তোলা নিয়ে পার করছেন ব্যস্ত সময়। অনেকেই আবার ক্ষেতে কীটনাশক দিচ্ছেন। কেউ জমির আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ আবার নতুন করে প্রস্তুত করছেন আবাদের জমি।  সবমিলিয়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, টমেটো, লাউ, মূলা, মিষ্টিকুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের সবজিতে ভরে উঠেছে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ।

সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের কালিবালা গ্রামের একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, শীতকালীন সবজি আবাদে ফলন ভালো হয় এবং কৃষক লাভের মুখ দেখেন। তবে আবহাওয়ার একটু হেরফের হলে সবজির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাড়তি বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশা হলে ফসলের ক্ষতি হয় বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে কৃষক মনছুর মণ্ডল ও আবু হানিফ বলেন, সবজি চাষ করতে খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক অল্প সময়ের মধ্যেই সবজি বাজারজাত করা যায়। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রিও করা যায়। এতে কৃষকের বেশ লাভ হয়, যা অন্য ফসলে সম্ভব না।

গাবতলী ও শজাহানপুর উপজেলার কৃষক হজরত আলী ও কাশেম মিয়া জানান, রবি বা শীত মৌসুমের সবজি প্রায় তিনভাগে চাষ করেন কৃষকরা। অনেকেই শীতের প্রথম ভাগে সবজি বাজারে তুলতে মাঠে নামেন। কারণ এই সময়ে সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়। দ্বিতীয় ভাগে শীতের মাঝামাঝিতে সবজি হাটে-বাজারে তোলার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করেন বেশকিছু কৃষক। আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকলে এ সময়টাতে সবজির ভালো দাম মেলে। তবে শেষভাগে উৎপাদিত সবজির ভালো দাম পাওয়া নিয়ে অনেকটা ঝুঁকি থাকে। যেকোনো আগামজাতের ফসল চাষে ফলন কম হয়। তবে ঠিকঠাক মতো ফসল ঘরে তুলতে পারলে বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. ফরিদুর রহমান জানান, জেলার কিছু কিছু এলাকায় এখনো খরিপ-১ ও আগাম মৌসুমে চাষ করা কিছু সবজি মাঠে রয়েছে। বর্তমানে রবি মৌসুমের শীতকালীন সবজি চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ জেলার চাষিরা। মূলত আগস্ট থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাস সময়কালের মধ্যে চাষাবাদকে আগাম চাষ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। আর ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাস চাষাবাদকে রবি মৌসুমের চাষাবাদ বলা হয়।

তিনি বলেন, জেলায় এ পর্যন্ত গড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে রবি মৌসুমের শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। এ বছর পুরো রবি মৌসুমে জেলায় ১২ হাজার ৮১৩ হেক্টর জমিতে রকমারি সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সবজি চাষ ও চারা উৎপাদনে এ জেলার চাষিরা নিজেরাই অনেকটা অভিজ্ঞ বলে জানান জেলা কৃষি বিভাগ। তবু তাদের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে চাষিদের প্রয়োজনী পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে বলেও জানান তারা।

প্রতিবছর শীতের সবজি নিয়ে বগুড়া জেলার কৃষকরা বরাবরই ব্যস্ত থাকেন। আবহাওয়া অনুকূলে ও বাজার দর ভালো থাকলে শীতকালীন সবজি চাষে বেশ লাভবান হন তারা। বাংলানিউজ

সূত্র,  আমাদের সময়