Type to search

ভবদহের বাগদহ প্রকল্পে উৎপাদনে ভাটা ; বছরে সাড়ে ৪০০ টন ধান ও দুই কোটি টাকার মাছের উৎপান ঘাটতি

অন্যান্য

ভবদহের বাগদহ প্রকল্পে উৎপাদনে ভাটা ; বছরে সাড়ে ৪০০ টন ধান ও দুই কোটি টাকার মাছের উৎপান ঘাটতি

বাগদহ বিল কৃষি ও মৎস্য প্রকল্প অর্থাভাবে সেচ পাম্প বসাতে পারছে না
স্টাফ রিপোর্টার : অভয়নগর উপজেলার ভবদহের জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত বাগদহ বিল। ২০০৮ সালে এলাকা জলাবদ্ধতা মুক্ত হলে ওই বিলটি ঘিরে গড়ে উঠে বাগদহ বিল কৃষি ও মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প। প্রকল্পের আয়তন প্রায় ১৫৬ একর। বিলটিতে প্রায় ৫০০ কৃষক পরিবারের অন্ন সংস্থান হয়। প্রকল্পের শুরুতে বিলে মাছ চাষের পাশা পাশি ধান চাষ করে কৃষকেরা অধিক লাভবান হয়েছেন। সে সময়ে বিলটিতে প্রায় ৪৮০ টন ধান ও দুই কোটি টাকার মাছ উৎপাদন হয়েছে বলে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান। বিগত তিন বছর বিলটি সারা বছর জলাবদ্ধ থাকার কারনে কচুরিপানা ও জলজ আগাছা জন্মে পতিত হয়ে পড়ে রয়েছে।
বর্তমানে শ্রী হরি নদী নব্যতা হারিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভবদহ অঞ্চালের ২৭টি বিল জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। শুকনো মৌসুমে কিছু কিছু বিলে সেচ দিয়ে শুকিয়ে ধান চাষ করা সম্ভাব হচ্ছে। যে সব বিলে সেচ দেওয়া সম্ভাব হচ্ছে সেখানে ধান চাষের ফলে মাছের উৎপাদন ও বাড়ছে। তা ছাড়া যে সব বিলে সেচ দেওয়া সম্ভাব হচ্ছে না সেখানে কচুরিপানা ও জলজ জঙ্গলে অজন্মা বিলে পরিনত হয়েছে।
বাগদহ বিল অজন্মা পতিত বিলের একটি অংশ। বিল ঘুরে দেখা গেছে, চলিশিয়া ও বাগদহ গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বেদভিটা খাল। বাগদহ বিল কৃষি ও মৎস্য প্রকল্পটির জমে থাকা পানি সেচ দিয়ে ওই খালে তুলে দেওয়া হলে ভবহের ২১ ভেন্ট ও ৯ ভেন্টের কপাটে পৌছে যাবে। সেখানে স্থাপিত বিএডিসির সেচ প্রকল্পের পাম্প দিয়ে ওই পানি নিষ্কাশিত হয়ে সাগরে পৌছে যাবে। বেদভিটে খালে সেচযন্ত্র বসাতে হয়ে বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে অনেক অর্থ ব্যয় হবে। তাছাড়া প্রয়োজন মাফিক পাম্প ক্রয় করা এলাকার কৃষকের পক্ষে সম্ভাব হচ্ছে না। এর জন্য তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বাগদহ বিল কৃষি ও মৎস্য প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পের শুরুতে কয়েক বছর ভবহদের গেট দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হয়ে যাওয়ার ফলে প্রকল্পের সদস্যরা ধান ও মাছ চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়। কিন্তু বিগত কয়েক বছর পানি না শুকানোর কারনে কচুরিপানা ও আগাছা জন্মে বিলটি পতিত হয়ে পড়ে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিলের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বেদ ভিটে খাল ওই খালে পানি সেচ দিয়ে বিলটি শুকানো সম্ভাব। এ কাজে অনেক অর্থ ব্যয় হবে।’ এ জন্য তিনি সরকরের বিএডিসি(বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বিলের কৃষক হুমায়ূন কবির বলেন, ‘এক সময় ওই বিলে ধান চাষের পাশা পাশি তিল ও তরমুজের চাষ করতাম। এখন সে সব শুধু স্বপ্ন। দুই, তিন বছর বিলে ফসল না হওয়ার কারনে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।’ জেলা বিএডিসির সহকারি প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা সেচ সুবিধা দেওয়ার জন্য ভবদহ এলাকায় প্রকল্প হাতে নিয়েছি। বাগদহ বিল কৃষি ও মৎস্য প্রকল্পের কর্মকর্তারা আমাদের কাছে আসলে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হবে’।