Type to search

বিশ্বের ৩০ প্রভাবশালী প্রতিবন্ধী নেতার একজন বাংলাদেশের ভাস্কর

বাংলাদেশ

বিশ্বের ৩০ প্রভাবশালী প্রতিবন্ধী নেতার একজন বাংলাদেশের ভাস্কর

ভাস্কর ভট্টাচার্য সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট (অ্যাকসেসেবিলিটি) এবং চট্টগ্রামের ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
গত শনিবার মুঠোফোনে ভাস্কর বলেন, ‘এ সম্মাননা পেতে আমাকে আবেদন বা কিছুই করতে হয়নি। আমার বিভিন্ন কাজের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এটি কাজের ক্ষেত্রে বিশাল একটি স্বীকৃতি। সবচেয়ে বড় কথা, আমার নামের পাশে বাংলাদেশ লেখা থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করবে। নির্বাচিত ৩০ জন জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ফোরামে কথা বলার সুযোগ পাবেন।’

প্রতিবন্ধী মানুষের প্রবেশগম্যতা, তথ্যপ্রযুক্তিতে অভিগম্যতা ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ভাস্কর। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১৮ সালে তিনি ‘ডিজিটাল এমপাওয়ারমেন্ট অব পারসনস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস’ শীর্ষক ইউনেসকো পুরস্কারও পেয়েছিলেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীসহ সব শিক্ষার্থীর উপযোগী ডেইজি মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল বই প্রকাশের জন্যই মিলেছে এ পুরস্কার। অ্যাকসেসেবল ডিকশনারি তৈরির জন্যও পেয়েছেন সম্মাননা।

অনার্স পাস করার পর ২০০২ সালে ভাস্কর জাপানে ডাসকিন লিডারশিপ ট্রেনিং করার সুযোগ পান। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে ১০ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছিল এক বছরের এ প্রশিক্ষণে। এ ট্রেনিং প্রোগ্রামেই কম্পিউটারে ভাস্করের প্রথম হাতেখড়ি হয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর এই প্রশিক্ষণে জীবনের মোড় ঘুরে যায় ভাস্করের। দেশে ফিরে মাস্টার্স করেন তিনি।

পড়াশোনা শেষ করে প্রথম এক বছর কোথাও চাকরি পাননি ভাস্কর। কেউ বিশ্বাস করতে পারতেন না যে তিনি কোনো কাজ করতে পারবেন। এক বছর শুধু স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে কাটিয়েছেন। আর সেই ভাস্করই চট্টগ্রামে প্রথম কম্পিউটারাইজড ব্রেইল প্রোডাকশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করে ‘জাপান ব্রেইল লাইব্রেরি’ এবং ‘মালয়েশিয়ান কাউন্সিল ফর দ্য ব্লাইন্ড’। এসব কাজের মধ্য দিয়েই চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংস্থা ইপসাতে চাকরি পাওয়া সহজ হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের প্রথম অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তৈরি করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন ভাস্কর। ভাস্কর দুই লাখেরও বেশি পৃষ্ঠার পাঠ্য উপকরণকে অভিগম্য আকারে তৈরি করেছেন। পাঁচ শতাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আইসিটি দক্ষতা এবং সহায়ক প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। কোভিড-১৯ মহামারিতে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ এবং মাইগভ–এর সেবা–সম্পর্কিত তথ্যগুলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সহজগম্য করতে সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।

ব্যক্তিজীবনে ভাস্কর দুই মেয়ের জনক। তাঁর স্ত্রী শ্যামশ্রী দাশ ইপসাতে প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।সূত্র,প্রথমআলো