Type to search

নড়াইলে গুড় সংগ্রহের জন্য পাতিল তৈরীতে পাল পাড়ায় ব্যাপক ব্যবস্ততা

নড়াইল

নড়াইলে গুড় সংগ্রহের জন্য পাতিল তৈরীতে পাল পাড়ায় ব্যাপক ব্যবস্ততা

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
নড়াইলের গুড় সংগ্রহের জন্য পাতিল তৈরীতে পালপাড়ায় ব্যবস্ততা। শীত এলেই খেজুরের রস ও খাটি খেজুরের গুড় সংগ্রহের জন্য পাতিল তৈরীতে জেলার বিভিন্ন কুমার পল্লীতে বাড়ে ব্যাপক ব্যাস্ততা। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, প্রতিটি কুমার পল্লীতে গুড় সংগ্রহের প্রয়োজনীয় উপকরণ ঠিলে কলস বাটি তৈরী করার জন্য ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বাড়ে ব্যবস্ততা। তারা ভোর থেকে মাটির পাতিল তৈরীর উপযোগী এটেল মাটি সংগ্রহ করে তা ভিজিয়ে ময়ান করে আঠালো ভাবে প্রস্তুত করে। এর পর তারা চাকার ছাচের মাধ্যমে শুরু করে খন্ড খন্ড পাতিল তৈরীর কাজ। তৈরীকৃত খন্ড পাতিলের অংশ রোদে শুকিয়ে দু-খন্ড পাতিলের অংশ জোড়া দেওয়ার পর পুর্ণাঙ্গ পাতিলের আকার ধারণ করে। এর পর তাতে রং করে শুরু করে পোড়ানোর কাজ।
পোড়ানোর পরই তৈরী হয় একটি পুর্নাঙ্গ মাটির পাতিল, যা খেজুরের রস ও গুড় সংগ্রহের জন্য হয় উপযোগী একটি পাত্র। আর এভাবেই পুরা শীতের মৌসুম জুড়ে পাল-পাড়া অর্থাৎ কুমার পল্লীতে চলে ব্যবস্ততা। মৌসুমী ব্যবস্ততা ছাড়া সারা বছরই তাদের থাকতে হয় বসে। তবুও জেলার কয়েকটি গ্রামের মৃৎ শিল্পীরা বংশ পরম্পরায় বাপ-দাদার এ আদি পেশাটি আকড়ে ধরে আছেন। মৃৎ শিল্পী অনিমা পাল বলেন, প্রতিদিন তিনি ও তার স্বামী মিলে ৪০ থেকে ৫০টি ভাড় তৈরি করতে পারেন। মৃৎ শিল্পী অনিমেষ পাল ও তারক পাল বলেন, প্রতিটি ভাড় ১৫/২০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
আর ভাড় ও কলসী বিক্রির টাকা দিয়ে তারা ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া ও সংসারের খরচ যুগিয়ে থাকে। পাল বাড়ী অর্থাৎ কুমার পল্লীর সাথে সাথে বেড়ে যায় গাছিদের পরিবারের ব্যস্ততা। আবহমান বাংলার প্রতিটি ঘরে-ঘরে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও ব্যাবস্ততা বেড়ে যায় দিগুন। ঠিলে ধুয়ে দে বউ-গাছ কাঁটতে যাব সন্ধে রস ঝেড়ে এনে জাউ রেন্ধে খাঁব, ঠিলে ধুয়ে দে বউ গাছ কাঁটতে যাব। এই প্রবাদটি শীতের আগমনে চিরায়ত বাংলার প্রতিটি মানুষের মুখে-মুখে ধ্বনিত হয় । কুঁয়াশার চাঁদরে মোড়ানো সকালের সোনালী সূর্য্যের মৃদু হাসি বাংলার মানুষকে জানিয়ে দেয় খেজুর রসের ঐতিহ্যে কথা। এসময় নড়াইলের প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল জুঁড়ে শুরু হয় গাছিদের খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীর অবিরাম প্রস্তুতি।
শীত আসলেই আবহমান বাংলার ঘরেঘরে শুরু হয় উৎসবের আমেজ। প্রতি ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা পুলি তৈরীর জন্য ঢেঁকিতে চাউলের গুড়া তৈরীর মহোৎসব। বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে সন্ধা হলেই একদিকে শুরু হয় কবি গান অন্য দিকে সন্ধে রস দিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন প্রকার পিঠা পুলিসহ পায়েশ তৈরীর ধুম।

Next Up