Type to search

নড়াইলের মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত কালনা সেতু’ চালু হবে সেপ্টেম্বরে

নড়াইল

নড়াইলের মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত কালনা সেতু’ চালু হবে সেপ্টেম্বরে

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে :
মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু। এই সেতুর পশ্চিম প্রান্তেকালনা সেতু’ চালু হবে সেপ্টেম্বরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা এবং পূর্ব প্রান্তে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
 সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী জানিয়েছেন, কালনা সেতু সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে
সৈয়দ আসলাম আলী জানান, এ পর্যন্ত সেতুর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মিত হচ্ছে।
কালনাঘাটে স্থাপিত নামফলক থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালর ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কালনা সেতু চালু হলে বেনাপোল, যশোর, খুলনা, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঢাকাসহ আশপাশের জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এমনকি এশিয়ান হাইওয়ের আওতায় ভারতের সঙ্গে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালু হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কালনাঘাট থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে সেতুটি চালু হলে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে। এ ছাড়া শিল্প শহর যশোরের নওয়াপাড়া এবং মোংলা বন্দর ও সাতক্ষীরা স্থলবন্দরের যোগাযোগ সহজ হবে।
তবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ নির্মাণ করা হলেও ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত এ ধরনের সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’র সুফল পাচ্ছে না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি অংশ। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল পর্যন্ত বর্তমানে দুই লেন সড়ক চালু আছে। এই অংশে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ সড়ক নির্মাণের বিষয়টি প্রকল্পাধীন বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পদ্মা সেতুর সঙ্গে কালনা সেতুর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। এ দুটি সেতু (পদ্মা ও কালনা) রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। ফেরিঘাটের অপেক্ষা আর যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে না। যাত্রীসাধারণের পাশাপাশি কৃষিপণ্য বেচাকেনার ক্ষেত্রেও সহজ হবে। পাশাপাশি পদ্মা ও কালনাঘাট এলাকায় শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে। ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বাসসহ অন্যান্য যানবাহন চালকেরা জানান, ফেরিঘাট মানেই ভোগান্তি। তাদের আশা পদ্মা ও কালনা সেতু চালু হলে সেই কষ্ট আর থাকবে না। তবে পদ্মা সেতুর টোলের পরিমাণ কম হলে ভালো হতো বলে মন্তব্য করেন যানবাহনচালকেরা। পাশাপাশি কালনা সেতুর টোলের পরিমাণ কম হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান  বলেন, কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৫০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৫০ কোটি টাকা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *