Type to search

নড়াইলের মধুমতি, সেতু’র উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনন্দে ভাসছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী

নড়াইল

নড়াইলের মধুমতি, সেতু’র উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনন্দে ভাসছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলের মধুমতি সেতুর, উদ্বোধন আনন্দে ভাসছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী।
অবশেষে দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা তথা ‘মধুমতি সেতু’র দ্বার খুলছে আগামি ১০ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করবেন। এ খবরে আনন্দিত নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মানুষ। মধুমতি সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রতিশ্রতিও পূরণ হবে।ন আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়, জানান,
নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী কালনাঘাট এলাকায় নির্মিত কালনা তথা মধুমতি সেতু উদ্বোধনের খবরে উচ্ছ্বসিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি মানুষ। এখন অপেক্ষার ক্ষণ গুনছেন যাত্রীসাধারণ, যানবাহন চালকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। আগামি ১০ অক্টোবর বেলা ১২ টার দিকে ভিডিওকনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী মধুমতি সেতুর উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে গত ৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নড়াইল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছেন সবাই নড়াইলসহদক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে ২০০৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নড়াইলের সুলতান মঞ্চে নির্বাচনী জনসভায় কালনা পয়েন্টে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরপর ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালনা সেতু’ নামকরণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে কালনা সেতুর নাম ‘মধুমতি সেতু’ নামকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবেন এ অঞ্চলের মানুষ।
এদিকে, রাতের দৃষ্টিনন্দন আলোয় মধুমতি সেতুর নান্দনিক স্থাপত্য শৈলী আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সেতুতে প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও দুরদুরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন এখানে। জেলা প্রশাসক মো.হাবিবুর রহমান বলেন, বর্ণাঢ্য আয়োজনে আগামি ১০ অক্টোবর মধুমতি সেতু উদ্বোধন হবে। এ উপলক্ষে নড়াইল ও গোপালগঞ্জ প্রান্তে দু’টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। দুপ্রান্তে থাকবে হাজারো জনতার উপস্থিতি। নড়াইল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধারণের নিরাপত্তার ব্যসস্থা নেওয়া হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে মধুমতি সেতু নির্মিত হয়েছে। সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে নড়াইলের কালনাঘাট এবং পূর্বপ্রান্তে গোপালগঞ্জের শংকরপাশা। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দুরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশেপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে।
মধুমতি দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈঘর্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে।
এদিকে, যশোরের মনিহার সিনেমা হল চত্বর থেকে নড়াইলের কালনাঘাট পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার সড়ক অপ্রশস্ত থাকায় মধুমতি সেতু চালু হয়ে এ সড়কে যানবাহনের চাপ সামাল দেয়া অনেক কঠিন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন চালক ও যাত্রীসাধারণ। যদিও ১৮ফুট প্রশস্ত সড়কটি ২৪ ফুট করার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে সড়কের দুই পাশে গাছকাটা শেষ পর্যায়ে থাকলেও প্রশস্তকরণের কাজ এখনো শুরু হয়নি।