Type to search

দেশ যেন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত না হয়: কুষ্টিয়ার এসপিকে হাইকোর্ট

অন্যান্য

দেশ যেন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত না হয়: কুষ্টিয়ার এসপিকে হাইকোর্ট

 

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স

কুষ্টিয়ায় পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় তলবাদেশে হাজির হওয়া পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘কে কোন দল, কোন আদর্শের সেটা বিবেচনা করার দায়িত্ব পুলিশের নয়। মানুষের এমন যেন মনে না হয় যে দেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। আদালতে এসপির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাহেরুল ইসলাম।

আদালত বলেন, ‘পত্রিকায় খবর অনুযায়ী যা দেখলাম তাতে এটা যদি বাস্তব চিত্র হয়, তাহলে ভয়ঙ্কর অবস্থা। পুলিশকে কথায় নয়, কাজে পটু হতে হবে। পুলিশ যাতে মানুষের বন্ধু হয়, সেটা করতে হবে। সমাজকে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে হবে। আইনের শাসন, বিচার ব্যবস্থা একা পূর্ণাঙ্গতা পায় না। রাষ্ট্রের সব অঙ্গ এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। এজন্য কথায় পটু না হয়ে, কাজ করতে হবে।’

এর আগে এক আবেদনের মাধ্যমে এস এম তানভীর আরাফাত ক্ষমা প্রার্থনা করে আদালতকে জানান, তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি। তাই এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হবেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল আর কখনও হবে না।

এসপির তার আবেদনে আরও বলেন, ‘বিচার বিভাগের জন্য আমার মনে সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। কোনও অবস্থাতেই বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখানোর কথা দূরে থাক, বরং বিচার বিভাগের দেওয়া কাজে নিয়োজিত হতে পারলে নিজেকে সম্মানিত বোধ করি। এ ঘটনায় আমি মনের গভীর থেকে অনুতপ্ত। আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

এরপর আদালত ক্ষমার আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণের আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত এসপিকে বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের প্রতি আপনাদের মনোভাব আগামী দিনের কর্মকাণ্ডে কতটা প্রতিফলিত হয় সেটা দেখতে চাই। পরে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করেন।’

এর আগে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসীন হাসানের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। গত ২০ জানুয়ারি বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দিতে হাজির হন।

প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়া ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতের দুর্ব্যবহারের বিষয়ে অভিযোগ তুলে বিচার চেয়ে আবেদন জানান কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান। গত ১৯ জানুয়ারি ওই এসপির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরকেও অভিযোগপত্রের একটি অনুলিপি পাঠানো হয়। এছাড়াও একই ঘটনায় আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের আইজির দফতরেও আবেদনটির অনুলিপি পাঠানো হয়।

এরপর বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এলে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে এসপির ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে এসপিকে তলবের আদেশ দেন। সে তলবাদেশে হাজির হওয়ার আগেই হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ক্ষমা চেয়ে আবেদন জানান ওই এসপি।সূত্র,  বাংলা ট্রিবিউন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *