Type to search

ঝিকরগাছায় প্রভাবশালী জামায়াতের আমির ও ইউপি সদস্যের নিকট সরকারি দপ্তর জিম্মী পর্ব-৩

ঝিকরগাছা

ঝিকরগাছায় প্রভাবশালী জামায়াতের আমির ও ইউপি সদস্যের নিকট সরকারি দপ্তর জিম্মী পর্ব-৩

 

আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা :

ঝিকরগাছা উপজেলার ৭নং নাভারণ ইউনিয়নের জামায়াতের আমির ও হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আসাদুজ্জামান ও ৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাহবুর রহমানের নিকট সরকারি দপ্তর সমুহ জিম্মীর বিষয়ে দায়েরকৃত অভিযোগে জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জুরুল হকের দেওয়া তদন্তের বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহবায়ক ও শার্শা উপজেলা সমবায় অফিসার এবিএসএম আক্কাস আলী, সদস্য ও শার্শা উপজেলা সমবায় অফিসের সহকারী পরিদর্শক কাজী শামীম হোসেন এবং সদস্য ও ঝিকরগাছা উপজেলা সমবায় অফিসের সহকারী পরিদর্শক মোঃ তোয়াব আলীর স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায়, হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি তার লিখিত বক্তব্যে জানান, সমিতির নামে ০২টি জলমহাল ইজারা রয়েছে। উহার মধ্যে হাড়িয়া দিঘি নামক জলকর ইজারা প্রদানের বিষয়ে তিনি জানেন। কিন্তু উত্তর রাজাপুর খাল ইজারা প্রদানের বিষয় তিনি কিছু জানেন না। সেকারণে তিনি খাতাপত্র লিপিবদ্ধরেন নাই। তদন্তকারী অফিসার তদন্তকালে জানতে পারেন যে, সমিতির কার্যালয় হতে উত্তর রাজাপুর প্রায় ১২/১৪ কিলোমিটার দূরে। বিধায় এত দূরে সদস্যদের পক্ষে প্রত্যহ গিয়ে মাছ চাষ করা সম্ভব নহে। আলোচনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানতে পারেন, উত্তর রাজাপুর খালটি সাব লিজ দেওয়া হয়েছে। সমিতির সদস্যগণ সমিতির নামে মাছ ছাড়া খাবার প্রদান আহরণ ও মাছ বিক্রয়ের সাথে জড়িত নয় ফলের সভাপতি সাহেব একাই জলমহলের সকল কার্য সম্পাদন ও সুবিধা ভোগ করেন। সদস্যগণ কোন প্রকার সুযোগ-সুবিধা পান না। সমিতির ক্যাশ বহি ৩০/৬/২০২১ইং তারিখের পর আর লেখা নাই। এ ব্যাপারে সভাপতি সাহেবের লিখিত বক্তব্যের স্বীকার করেন যে তিনি হারিয়ে দেবী ইজারার ব্যাপারে জানেন তিনি সেটাই লিখতে পারতেন কিন্তু তাহা করেন নাই। তিনি সেটা না করে সত্যকে গোপন করার চেষ্টা করেছেন। এতে সমিতির সদস্য ও সরকারি রাজস্ব (অডিট ফি) থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জলমহল নীতিমালা ২০০৯ অনুযায়ী প্রকৃত মৎস্যজীবী সমিতি ব্যতীত অন্য কোন সংগঠন জলমহল ইজারা গ্রহণের যোগ্য নহে। এক্ষেত্রে অত্র সমিতি কিভাবে জলমহল ইজারা গ্রহণ করেছেন এ বিষয়ে মতামত প্রদান করা সম্ভব নহে। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী ১৮ থেকে ৩৮ বছরের মধ্যে বয়সের সকল নারী-পুরুষ যুব এর আওতায়। পত্র সমিতির সদস্যগণ বর্তমান বয়স ৪৫ বছরের উর্ধ্বে। সমবায় সমিতির পরিচালিত হয় সমবায় সমিতির আইন ও বিধিমালার আলোকে এক্ষেত্রে বয়সের মাপকাঠি সমিতির পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে।
হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর পক্ষে কোন পুকুর, খাল, বিল বা বাওড় এর ইজারা গ্রহণ করা সম্ভব নয় কারণ উক্ত সমিতি মৎস্যজীবী সমিতি নয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সরকারি জলমহল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০০৯ এর আওতায় উপজেলা ও জেলা সমবায় দপ্তরের মাধ্যমেই সেটা একাধিকবার প্রমাণিত হলেও দপ্তর জিম্মী থাকার করণে পদক্ষেপ গ্রহণ না করার বিভিন্ন অজুহাত তৈরী করছে দপ্তর সমূহ। উপজেলার ৭নং নাভারণ ইউনিয়নের জামায়াতের আমির আসাদুজ্জামান ও শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাহবুর রহমানের মত প্রভাবশালী নেতাদের কারণে সরকারি দপ্তর গুলো জিম্মী হয়ে থাকায় সাধারণ মানুষ সেবা নেওয়ার জন্য সরকারি দপ্তরে যেতে পারছে না। অবিলম্বে এমন নেতাদের আইনের আওতায় এনে প্রশাসনের নিকট শাস্তির দাবি ও অসহায় পরিবারের প্রতি ন্যায় বিচারের দাবী করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তোভোগী পরিবারের সদস্য শহিদুল ইসলাম পল্লব বলেন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আমি আবেদন করেছি। আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। সরকারি দপ্তর বলেছেন আমার বিষয়ে ন্যায় বিচার করবেন। কিন্তু কবে করবেন সেটা আমার জানা নেই।
নাভারণ ইউনিয়নের জামায়তের আমির, হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, কোনো কিছু জানতে বা তথ্যের জন্য ইউএনও’র সাথে যোগাযোগ করেন।
উপজেলা জামায়াতের আমির হারুণ অর রশিদ বলেন, তিনি যদি এমন কোনো কিছু করেন। তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান (মেম্বার) এর সাথে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত ০১৭৫৪-২৩৭৫৯০ নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা সমবায় অফিসার সালাউদ্দিন বলেন, আমি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সমিতির সভাপতিকে চিঠি দিয়েছি। তবে তারা এখনো পর্যন্ত আমাদের কোনো উত্তর দেননি।
জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জরুল হক বলেন, আমার নিকট যে তথ্য ছিলো সব আপনাকে দিয়েছি। কিন্তু আবেদনকারী তার দপ্তরের অধিনে তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত কোন কাগজপত্র পাননি।
বিভাগীয় যুগ্ম নিবন্ধক ও আপীল কর্তৃপক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমি তাকে অফিসিয়াল আদেশ দিয়েছি। এখন যদি জেলা কর্মকর্তা ঠিকতম তথ্য না দেয়, তাহলে আপনি তথ্য কমিশনে অভিযোগ করেন।