Type to search

ঝিকরগাছার পল্লীতে প্রবাসীর স্ত্রীকে ফুসলিয়ে বিয়ে করার নায়ক এজেন্ট ব্যাংকের পরিচালক পিন্টু!

ঝিকরগাছা

ঝিকরগাছার পল্লীতে প্রবাসীর স্ত্রীকে ফুসলিয়ে বিয়ে করার নায়ক এজেন্ট ব্যাংকের পরিচালক পিন্টু!

 

আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছার পল্লীতে প্রবাসীর সোনার সংসার ভেঙ্গে স্ত্রী ও এক সন্তানের জননীকে ফুসলিয়ে বিয়ে করার নায়ক শিওরদাহ বাজারের অগ্রণী এজেন্ট ব্যাংকের পরিচালক সোহরাব হোসেন @ পিন্টু, বলে অভিযোগ তুলেছে এলাকার সচেতন মহল। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের শিওরদাহ গ্রামে। এমতাবস্তায় প্রবাসী তার সন্তানের দিকে তাকিয়ে বউ ফেরৎ নিতে চাইলেও সমাজের অনেক বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে বলে প্রবাসী ব্যক্তির দাবী। অপর দিকে নির্বাসখোলা ইউনিয়নের বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার কাজী আনোয়ারুল ইসলাম প্রভাবশালীর ফোন পেয়ে তালাক রেজিষ্ট্রি বন্ধ করে দিয়েছে বলে তিনি জানান।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, পরিবারের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে পিতা-মাতার আদরের সন্তান ইমামুল হোসেন (৩৮) প্রবাসের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন। সে শিওরদাহ মাঝেরপাড়া গ্রামের মৃত মনসের আলীর ছেলে। প্রবাস জীবনে যাওয়ার পূর্বে তিনি একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে হাসিয়ারা খাতুন @ হাসি (৩৬) কে বিবাহ করেন এবং তাদের কোল জুড়ে একটি ছেলে সন্তান আসে। বর্তমানে তাদের ছেলেটি এখন ৯ম শ্রেণির ছাত্র। ২০০৮ সালের শেষের দিকে সে বিদেশ যাওয়ার পড়ে ২০১৬সালে তার স্ত্রী হাসির সাথে পরকীয়া শুরু করেন পার্শ্ববর্তী আশিংড়ী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সোহরাব হোসেন @ পিন্টু (৪৮)। পিন্টুও এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। পিন্টু হাসির সাথে দীর্ঘদিন প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকে (হাসি) ফুসলিয়ে যশোরের বারান্দীপাড়ার কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে হাসির অচেনা এক ব্যক্তিকে স্বাক্ষী বানিয়ে বিগত ১০এপ্রিল তার প্রবাসী স্বামী ইমামুলকে ডি তালাক (রেজি: ডি, বই নং ০৬/২৩ (ক), বালাম নং ৫৯৩, পৃষ্ঠা ০৩, তাং ১০/০৪/২০২৩ইং) বা বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়ে দেন এবং ০৫ আগস্ট ২লক্ষ টাকা দেন মোহরের মাধ্যমে বিবাহ (রেজি: এ, বই নং ০৬/২৩(ক), তালিকা ৪৯২, পৃষ্ঠা ০৯, তাং ০৫/০৮/২০২৩ইং) বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এরপর যথারীতি যে যার বাড়িতে চলে যান। হঠাৎ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রবাসী স্বামী ইমামুল ২২আগস্ট বাড়িতে চলে আসে। তখন তার স্ত্রী হাসি তার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে পরিবারের মধ্যে অশান্তি শুরু করে এবং হাসি তার এলাকার একজনের নিকট বলেন আমি ইমামুলকে তালাক দিয়েছি এবং পিন্টুকে বিবাহ করেছি। এই কথা এলাকায় প্রচার হলে তার পিতা তাকে আনতে ২৩আগস্ট জামাই বাড়িতে যান। তখন মেয়ে বলে তুমি বাড়ি যাও আমি আসছি এই বলে পিন্টুর সাথে চলে যায়। ঘটনার এক পর্যায়ে ২৪আগস্ট রাতে স্থানীয় ভাবে বসে উভয়পক্ষ মধ্যে মিলমিশ করে পিন্টু ও হাসির বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেন নির্বাসখোলা ইউনিয়নের কাজী অফিসের সহকারী। এরপর প্রবাসী ইমামুল হাসিকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের বিষয়ে এলাকার লোকজন তাদের উপর চোখ টানাটানি করতে থাকে ঐ বউ নিতে হলে হিল্লা বিয়ে না দিয়ে কি করে আবার এই বাড়িতে উঠলো। একথা হাসির পিতার কানে গেলে ২৫আগস্ট সকালে সে তার জামাই (ইমামুল) এর বাড়ি হতে নিজের বাড়িতে চলে আসেন। বর্তমানে সে তার পিত্রালয় রয়েছে। পরবর্তীতে বিকালে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনার বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে হাসির পিত্রালয়ে গেলে তখন নির্বাসখোলা ইউনিয়নের বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার কাজী আনোয়ারুল ইসলামের তাদের বাড়ি হতে বের হতে দেখা যায়।
কাজীর উপস্থিতির বিষয়ে হাসির পিতা রফিকুল ইসলামের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কাজী এসেছিলেন আমার মেয়ে যেন আবার পিন্টুর নিকট চলে যায় সেটা বলতে। এছাড়াও তিনি বলেন, পিন্টু আমার মেয়ের নিকট থেকে ১জোড়া কানের দুল, ১জোড়া হাতের রুলি এবং নগদ ১লক্ষ ৮০হাজার টাকাসহ আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে বিয়ে করেছে। আমার মেয়ের সোনার সংসার নষ্ট করেছে আমি পিন্টুর প্রশাসনের নিকট সঠিক বিচার চাই।
প্রবাসী ইমামুল হোসেনের স্ত্রী হাসিয়ারা খাতুন @ হাসি বলেন, আমি রাতে ওদের (ইমামুল) বাড়িতে ছিলাম। তার পরিবারের অন্য সদস্যরা আমাকে দুই বার বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যেতে বলেছে। আমি তাদেরকে বলেছিলাম সকালে চলে যাবো। পরবর্তীতে সকালে আমার পিতার সাথে পিতার বাড়িতে চলে এসেছি।
প্রবাসী ইমামুল হোসেন বলেন, আমার কেউ ভূলের উদ্ধে নয়, মানুষ ভূল করে। যা হোক আমার সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি সব কিছু মেনে নিয়ে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমি সংসার করতে চাই।
পরকীয়ার নবাগত প্রেমিক ওরফে দ্বিতীয় স্বামী সোহরাব হোসেন @ পিন্টুর নিকট হাসি কি হয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ও আমার স্ত্রী। তখন হাসির একটা সন্তান ও তার দুইটা সন্তার থাকা অবস্থায় প্রবাসী ইমামুলের ঘর ভাঙ্গার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সে বলেন আমার ভূল হয়েছে।
নির্বাসখোলা ইউনিয়নের বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার কাজী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, উভয় পক্ষ মিলে কথাবর্তা ও লেখালিখি হল। আমাকে একজন ফোন দিয়ে বলেছে তালাকটা যেন রেজিষ্ট্রি না করি। তাই আমি তালাক রেজিষ্ট্রি করেনি। কিন্তু হাসির পিত্রালয় গিয়ে হাসিকে পিন্টুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা তিনি অস্বিকার করেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্ত বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমরা লিখিত কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।