Type to search

চৌগাছায় তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার শামীমের সন্ত্রাসী হামলা, দুটি গুলির খোসা উদ্ধার

অপরাধ জেলার সংবাদ

চৌগাছায় তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার শামীমের সন্ত্রাসী হামলা, দুটি গুলির খোসা উদ্ধার

 

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ

যশোরের চৌগাছায় আবারো সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসী শামীম কবির ওরফে কিলার শামীম ও তার বাহিনী। গত ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের পূর্বপাড়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। শামীম জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে। ১৭ বছর সাজাসহ ৬টি খুন, অস্ত্রসহ ১৪ টি মামলা নিয়ে পুলিশের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তাকিাভ’ক্ত এই সন্ত্রাসী।

ঘটনায় আহত আব্দুল জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় গ্রামের চায়ের আমার ভাই এবং আমার উপরে আক্রমন করে শামীম। সে শর্টগান দিয়ে আমাকে গুলি করলে তা আমার লুঙ্গি ছিড়ে বেরিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসিরা অস্ত্রসহ শামীম ও তার সঙ্গী ইয়াসিনকে ধরে বেদম পিটুনি দেয়। সেসময় শামীম ও ইয়াসিন মটর সাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২৫ নভেম্বর আব্দুল বাদি হয়ে কিলার শামীম ও ইয়াসিনকে অভিযুক্ত করে চৌগাছা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল থেকে ২টি বন্দুকের গুলির খোসা, একটি মটর সাইকেল, অর্ধেক বোতল মদ আলামত হিসেবে গ্রহন করেছে বলে গ্রামবাসিরা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য ২০১৩ সালে ২৬ সেপ্টেম্বর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও চৌগাছার সিংঝুলি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান মিন্টুকে প্রকাশ্য দিবালোকে শত লোকের সামনে শর্টগান দিয়ে গুলি করে খুন করে এই কিলার শামীম। সেই থেকে গত দশ বছর ধরে সেই অবৈধ শর্টগান দিয়ে একের পর এক ভয়ঙ্কর সব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে চলেছে শামীম। ২০২০ এক কলেজ ছাত্রকে শর্টগান ঠেকিয়ে অপহরন, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, জগন্নাথপুর গ্রামে একজনকে শর্টগান দিয়ে হুমকি, এপ্রিল মাসে স্ত্রী-কন্যার সম্ভ্রম বাচাতে বাড়ি ছেড়ে পলাতক জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি আখতারুল জানিয়েছিলেন, তাদেরকে ভয় দেখাতে শর্ট দিয়ে গুলি ছুড়তো কিলার শামীম। তার কিছুদিন আগে রাতে একই গ্রামের এক হিন্দু প্রবাসির স্ত্রীকে ভয় দেখাতেও শর্টগান দিয়ে আকাশে গুলি ছুড়েছিল শামীম। এছাড়া গত ২১ নভেম্বর বুধবার রাতে মাতাল অবস্থায় নিজ বাড়ির মধ্যে শর্টগান দিয়ে বাতাসে গুলি ছোড়ে এই সন্ত্রাসী।

জানাযায়,১৯৯৬ সালে মকবুল, ১৯৯৯ সালে শহিদুলকে খুন করে খুনি হিসেবে আতœপ্রকাশ করে শামীম কবির। এরপরে ২০০৪ সালে গরীবপুর গ্রামের মান্নানকে খুন করে গুম, ২০১২ সালে গরীবপুর গ্রামের শিশু সৌরভকে অপহরন করে হত্যা, ২০১৬ সালে ১৯ মার্চ যশোর সাত মাইলে বিএনপি নেতা ইদ্রিসকে খুনের মিশনে জড়িত থাকলেও চিনতে না পারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এছাড়া ২০১৭ সালে ১১ জানুয়ারি যশোর কোতয়ালী থানায় তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা ও অস্ত্র মামলা হয়। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের পরে স্থানীয় আওয়ামী নেতাদের সরাসরি মদদে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে আবারো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করে শামীম। সম্প্রতি এই সস্ত্রাসীকে বিভিন্ন মাধ্যমে উজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারন সম্পাদকের ছবির সাথে তার ছবি ছাপিয়ে ব্যানার ফেস্টুনে তাকে চৌগাছা উপজেলার ৩নং সিংহঝুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে প্রচার করা হলেও তাকে সিংহঝুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধূরী।

এতো কিছু করেও এতোদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে বহাল তবিয়তে থাকা কিলার শামীম গত শুক্রবার যেনো হঠাৎ করেই ক্ষমতা হারিয়েছে। কারন শুক্রবারের সন্ত্রাসী হামলার খবর শুনেই চৌগাছা থানার নবাগত ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী নিজে পুলিশ বহর নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে অভিযান শুরু করেন। তবে তিনি পৌছানোর আগেই পালিয়ে যায় কিলার শামীম।

এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন অভিযোগ পেয়েছি এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।