Type to search

চৌগাছায় উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ ও ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে অবৈধ বালু উত্তোলন

চৌগাছা

চৌগাছায় উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ ও ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে অবৈধ বালু উত্তোলন

কাফি পিন্টুর ক্ষমতার উৎস নিয়ে প্রশ্ন
চৌগাছায় উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ ও ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে অবৈধ বালু উত্তোলন

চৌগাছা প্রতিনিধি:
যশোরের চৌগাছায় উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ বারবার উপেক্ষা এমনকি আদালতের দেয়া ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে সরকারি খাস খতিয়ান এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চৌগাছার জাগদীশপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ হেল কাফি ওরফে পিন্টুর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগি সাখাওয়াত হোসেন লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চৌগাছা থানার ওসিকে জানিয়েছেন। তবে কোন কিছুকেই তোয়াক্কা না করে পিন্টু বালু তোলা অব্যাহত রেখেছেন। ফলে এলাকায় প্রশ্ন জেগেছে কাফি পিন্টুর ক্ষমতার উৎস কোথায়?
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগি সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, স্থানীয়ভাবে মিমাংশার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তিনি চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে ২০২১ সালের ৮ জুলাই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসন ঘটনার সত্যতা পেয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে কিছুদিন বালু তোলা বন্ধ করে দেয়। কিছুদিন বন্ধ রেখে ১০ আগস্ট থেকে আবারও বালু তোলা শুরু করে কাফি পিন্টু। পরে ১৪ আগস্ট তিনি অবৈধ ও জোর পূর্বক বালু তোলার বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনের পরও বালু উত্তোলন না থামালে ২৩ আগস্ট তিনি যশোরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে ১৪৪ ধারামতে মামলা করেন। আদালতের বিচারক ও যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি শুনানি করে ওই স্থানে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে চৌগাছা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে চৌগাছা থানার ওসির নির্দেশনায় পুলিশ আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টুকে পুলিশ আটক করে এবং শালিশ বিচারের মাধ্যমে কাফি পিন্টু অঙ্গীকার করে ওই স্থান থেকে আর বালু উত্তোলন করে বিক্রি করবে না এবং আমার জমির যে অংশ থেকে মাটি বিক্রি করে ক্ষতি করেছে তার পরিবর্তে কাফি পিন্টুর পাশ^বর্তী জমি থেকে সমপরিমান অংশ আমার নামে রেজিষ্ট্রি করে দেবে। আমার জমিতে বসত বাড়ি থাকায় পরবর্তীতে যাতে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় সেজন্য আমার জমির পাঁচ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে একটা পাড় বেধে দেবে। অভিযোগে আরও বলা হয় আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু তার দেয়া লিখিত অঙ্গিকার পুরন তো করেনই নি। গত প্রায় দুইমাস ধরে তিনি আবারও ওইস্থান থেকে বালু তুলে বিক্রি করছেন। এতে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন নিরাপত্তহীনতায় ভূগছি। লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয় ‘ওই জমি নিয়ে যে কোন সময় বড় ধরনের অঘটন বা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে যেতে পারে।’
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় সাখাওয়াৎ হোসেনের ফ্লাটবাড়ি লাগোয়া সরকারি খাস জমি থেকে কাফি পিন্টু গভীর পুকুর করে বালু উঠাচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, জগদীশপুর মৌজার ২৬৬ নম্বর দাগের খাস (১/১) খতিয়ানের ৬৬ শতাংশ (২বিঘা) সরকারি রাস্তার জমি দখলে নিয়ে নিয়মিত বালু উত্তোলন করছেন। একইসাথে ভুক্তভোগির জমি থেকেও গর্ত খুড়ে বালু তুলে বিক্রি করছেন। মাসের পর মাস বালু তোলায় সেখানে সৃষ্টি হয়েছে গভীর গর্তের। পাশ্ববর্তী ব্যক্তি মালিকানা ফসলি জমি এবং ভুক্তভোগি সাখাওয়াত ও তার ভাইয়েদের পাকা বাড়িও পড়েছে হুমকির মুখে। যে কোন সময় বড় ধরনের বৃষ্টি হলে তাদের বাড়ি ওই গভীর গর্তে ধ্বসে যেতে পারে।
এবিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে পিন্টুকে বালু তোলা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তিকে নিষেধ করা হলে তিনি কিছুদিন বালু তোলা বন্ধ রাখেন। কিছুদিন পর আবারও বালু তোলা শুরু করেন।