Type to search

চৌগাছায় ইউপি সদস্য সাময়িক বহিস্কার

জেলার সংবাদ

চৌগাছায় ইউপি সদস্য সাময়িক বহিস্কার

 

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছার ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের (জামিরা গ্রাম) ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ওরফে আনারকে সাময়িক বরখস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
চালের কার্ড, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, কাবিখা, ভিজিডি ও মাতৃত্বকালীন ভাতা দেয়ার নাম করে ওয়ার্ডের বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের ইপ-১ অধিশাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ আবু জাফর রিপন স্বাক্ষরিত স্মারক নং ৪৬,০১৭,০২৭,০০,০০,০২৮,২০১৪(অংশ-১)-১৯৬ এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফুলসারা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার ইউনিয়নের হতদরিদ্র মানুষের মাঝে চাউলের কার্ড, বয়স্ক ভাতার কার্ড, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, কাবখিা, ভিজিডি ও মাতৃত্বকালীন ভাতা দেয়ার নাম করে টাকা গ্রহন করেন। দিনের পর দিন ভুক্তভোগীদের কোন কার্ড না দেয়ায় গ্রামের শরিফ হোসেন গত বছরের ৪ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। দুদকের পক্ষ থেকে সেটি স্থানীয়ভাবে তদন্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট পাঠানো হয়। ইউএনওর নির্দেশে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান সেটি তদন্ত করেন। তদন্তকালীন সময়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর মেম্বর আনোয়ার হোসেন দুর্নীতির বিষয়টি অস্বীকার করে তার পক্ষে একটি গণস্বাক্ষরসহ বক্তব্য পেশ করেন। ১৮ নভেম্বর গ্রামের প্রায় শতাধিক ব্যক্তির গণস্বাক্ষরসহ স্থানীয় আলমগীর হোসেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার নিকট একটি আবেদন করেন।
এর প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেহেদি হাসান ওই বছরের ২৫ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে তিনি বলেন ‘‘গ্রামের ৩৫-৪০ জন ব্যক্তির উপস্থিতিতে তদন্ত করি। এসময় টাকা নেয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং তদন্ত কাজকে বিভ্রান্ত করার জন্য এলাকার জনগণকে ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে, স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে গণস্বাক্ষরসহ বক্তব্য পেশ করেন। তদন্তের সার্বিক তথ্য-উপাত্ত ও স্বাক্ষ্য পর্যালোচনা করে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত ইউপি সদস্য জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন আনারের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে।’’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্ত প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণ করেন। এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ ওই ইউপি সদস্যকে সাময়িক বহিস্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘(বিভিন্ন ভাতা নাম উল্লেখ করে ) ভাতা দেওয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদে ক্ষমতা প্রয়োগে প্রশাসনিক দৃষ্টিকোনে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে; সেহেতু সংঘটিত অপরাধ মূলক কার্যক্রম পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩৪ (১) অনুযায়ী উল্লেখিত ইউপি সদস্যকে তার স্বীয় পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।