Type to search

চৌগাছার মাড়–য়া স্কুল ও কলেজের কমিটি গঠন নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য

চৌগাছা

চৌগাছার মাড়–য়া স্কুল ও কলেজের কমিটি গঠন নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য

চৌগাছা প্রতিনিধি:
যশোরের চৌগাছার মাড়–য়া ইউসূফ আলী খান স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডি নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। একপক্ষ বলছেন, কমিটির প্রথম সভায় মাত্র তিনজন উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যেও একজন আগেই পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক বলছেন মিটিংয়ে ৭/৮ জন উপস্থিত ছিলেন। পরে ৭/৮জন স্বাক্ষর করেছেন।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব) অধ্যাপক ডাক্তার নাসির উদ্দিন উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আজাদ রহমান খানকে সভাপতি মনোনয়নের জন্য সুপারিশ করেন। সে মোতাবেক যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড আজাদ রহমান খানকে সভাপতি মনোনয়ন প্রদান করে। এরপর গত ১৯ মে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে গভর্নিং বডির প্রথম সভায় বিদ্যুৎসাহী সদস্য সহ-যোজন করা প্রসংগে সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সভায় গভর্নিং বডির ১২ জন সদস্যের মধ্যে সভাপতি, কলেজের অধ্যক্ষ ও সদস্য সচিব এবং অভিভাবক সদস্য হিসেবে একমাত্র কুমারেশ চন্দ্র মজুমদার উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের গভর্নিং বর্ডির সাবেক সভাপতি তবিবর রহমান খান।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতি জগদীশপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তবিবর রহমান খানের অভিযোগ, তিনি কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। অন্য সকল সদস্যরা তাকেই সভাপতি হিসেবে চেয়েছিলেন। তবে তাকে সভাপতি না করায় অন্য সদস্যরা কমিটির প্রথম সভায় উপস্থিত হননি। যাকে সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে তিনি, প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান এবং একমাত্র অভিভাবক সদস্য কুমারেশ মজুমদার (আগেই পদত্যাগ করেছেন বলে দাবিকৃত) উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, যেখানে কোরাম পূর্ণ হয়নি। সেখানে পরবর্তীতে সদস্যদের নানাভাবে ভীতি প্রদর্শন করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে বিদ্যুৎসাহী সদস্য মনোনীত করার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন যেখানে সভার কোরামই পূর্ণ হয়নি সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় কিভাবে?
তবিবর রহমান খান আরও বলেন কুমারেশ মজুমদার আগেই পদত্যাগ করেছেন। যার কপি আমার কাছে আছে। তিনি সেই পদত্যাগপত্রের কপিও সরবরাহ করেন। একইভাবে তিনজনের স্বাক্ষরকৃত রেজুলেশন খাতার দুই পৃষ্ঠার ছবিও সরবরাহ করা হয়।
কুমারেশ চন্দ্র মজুমদার প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বরাবর গত ১৮ মে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। পদত্যাগপত্র অনুলিপি দিয়েছেন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান এবং চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আমি মাড়–য়া ইউসূফ খান স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য। আমরা নির্বাচিত সকল সদস্যগণ (১০জন) প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর (১৯৯০) সাল থেকে নিয়মিত কমিটির সভাপতির দ্বায়িত্ব পালনকারী জনাব মোঃ তবিবর রহমান খানকে সভাপতি মনোনয়ন দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোর মহোদয়ের নিকট আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তাকে সভাপতি মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এমতাবস্থায় আমি ‘মাড়–য়া ইউসুফ খান স্কুল এন্ড কলেজের’ গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম।’’
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে কুমারেশ মজুমদার বলেন, দুই পক্ষের গ্যাঞ্জামের মধ্যে আমি থাকবো না বলে বলে দিয়েছি। এজন্য আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি। তবে ১৮ মে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করলেও তিনি ১৯ তারিখের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন পদত্যাগপত্র চেয়ারম্যান সাহেবের (তবিবর রহমান) কাছে আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান বলেন, মিটিংয়ে ৭/৮ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা আগে-পিছে করে ৭/৮ জন স্বাক্ষর করেছেন। তিনি বলেন, সবাই তো সময়মত আসতে পারেননা। যে যখন এসেছেন তখনই স্বাক্ষর করেছেন। কুমারেশ মজুমদারের পদত্যাগের বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, এমন কোন পদত্যাগপত্র আমি পাইনি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন গতকাল (১৯ মে) পর্যন্ত এমন কোন পদত্যাগ পত্র পাইনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, এমন কোন পদত্যাগপত্র আমার কাছে আসেনি। আসলে শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *