Type to search

চুয়াডাঙ্গায় এক বছরে ১২% বেড়েছে সরিষার আবাদ

কৃষি

চুয়াডাঙ্গায় এক বছরে ১২% বেড়েছে সরিষার আবাদ

চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, চুয়াডাঙ্গা থেকে
ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি লাভের আশায় চুয়াডাঙ্গায় সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। চলতি মৌসুমে জেলার চারটি উপজেলায় ৩ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে আলমডাঙ্গা উপজেলায়।
তেলবীজটির উৎপাদন বাড়াতে সরকারিভাবেও দেয়া হচ্ছে প্রণোদনা। কৃষক বলছেন, সরিষা চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুই-ই কম। তেলের দাম অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো। উৎপাদন বাড়লে দেশেও ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবে সরিষা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। এ থেকে উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ২০১ টন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭৮ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২ হাজার ১৫০, দামুড়হুদায় ৩৫৭ ও জীবননগর উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। ওই সময় সদর উপজেলার ৭৪০ কৃষককে ২ লাখ ৯৬ হাজার, আলমডাঙ্গার ৭ হাজার ৩৫০ কৃষককে ২৯ লাখ ৪০ হাজার, দামুড়হুদার ১ হাজার ১৬০ কৃষককে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৫৬ ও জীবননগর উপজেলার ১ হাজার ২৫০ কৃষককে ৫ লাখ টাকার প্রণোদনা দেয়া হয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৩২ টন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩১০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২ হাজার ৪৮৫, দামুড়হুদায় ৩১০ ও জীবননগর উপজেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। এ অর্থবছরে সদর উপজেলার ১ হাজার ১২০ কৃষককে ৬ লাখ ২৬ হাজার ৬৪০ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়। এছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলার ৮ হাজার ৬৪০ কৃষককে ৪৮ লাখ ৩৪ হাজার ৮০ টাকা, দামুড়হুদার ১ হাজার ৪৩০ কৃষককে ৭ লাখ ২৫ হাজার ১০ ও জীবননগর উপজেলার ১ হাজার ৪১০ কৃষককে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৮৭০ টাকার প্রণোদনা দেয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘জেলার চারটি উপজেলায় আমন ধান আবাদের পর এবং বোরো চাষের আগ পর্যন্ত বেশির ভাগ জমি অনাবাদি থাকে। কোনো কোনো কৃষক প্রণোদনা পেয়ে পড়ে থাকা জমির কিছু অংশে সরিষার আবাদ করেন। আবাদ বাড়ায় উৎপাদনও বাড়ছে। যদি জেলার বেশির ভাগ কৃষককে সরিষা আবাদে সম্পৃক্ত করা যায়, তাহলে এ জেলা থেকে ভোজ্যতেল উৎপাদন বাড়বে।’
এবার কৃষকরা টরি-৭ এবং বারি-৯, ১৩ ও ১৪ জাতের সরিষা বেশি আবাদ করেছেন। সাধারণত সরিষা ঘরে তুলতে ৮৫-৯০ দিন সময় লাগে।
শৈলগাড়ীর কৃষক আজিজুল বলেন, ‘আমার এক বিঘা জমিতে তিন মণের মতো সরিষা উৎপাদন হবে। এ সময়ে জমি পড়েই থাকে। সরিষা লাভজনক হবে বলে ধারণা করছি। এক বিঘা জমিতে ২০০০-২৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। তিন মণ সরিষার বাজার মূল্য ১২ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। সরিষা ওঠার পর এ জমিতে ধান চাষ করব।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার মাটি সরিষা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। টরি-৭ জাতের সরিষা প্রতি বিঘায় তিন থেকে সাড়ে তিন মণ, রাই-৫ জাতের সরিষা তিন থেকে সাড়ে তিন মণ, বারি জাতের ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ সরিষা ছয়-আট মণ, বারি-১২ জাতের সরিষা পাঁচ-ছয় মণ ও বারি-১৩ ও ১৪ জাতের সরিষা প্রতি বিঘায় সাত-নয় মণ উৎপাদন হয়।’