Type to search

চলন্ত গড়ি পুকেুরে ফেলে পুলিশ হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

জাতীয়

চলন্ত গড়ি পুকেুরে ফেলে পুলিশ হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

অনলাইন ডেক্স: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিহত ও আসামি পালানোর ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে। আরও দুই সদস্য হলেন-নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার খ-জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শাহরিয়ার হাসান, নারায়ণগঞ্জ ডিএসবি শাখার ডিআইও-২ মো. হুমায়ুন কবির খান।

কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসে অনুসন্ধান করে সুস্পষ্ট মতামতসহ একটি বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের নিকট দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

 

এদিকে, সেই পলাতক আসামিকে তিনদিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আসামিকে দিয়ে গাড়ি চালানোয় সে কৌশলে গাড়ি খাদে ফেলে নিজে পালিয়ে যায়। এতে দুই এসআইয়ের মৃত্যু ঘটলেও পালিয়ে যায় আসামি।

গত সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখনো আসামি পলাতক আছে বলে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি জানান, এ ঘটনায় আসামি এখনো পলাতক আছে। আসামির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ইয়াবা পানিতে পড়ে যাওয়ায় কিছু গলে গেছে, বাকিগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে, ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় সোনারগাঁও থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

এর আগে, সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দুই এসআইকে উদ্ধার করে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও আরও এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আহত হয়েছে। আহত এএসআইকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহতরা হলেন-ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মুনসুরাবাদ গ্রামের কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে কাজী সালেহ আহম্মেদ ও গোপালগঞ্জের চরভাটপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এসএম শরীফুল ইসলাম। তারা সোনসারগাঁও থানায় কর্মরত ছিলেন।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, গোপন সূত্রে খবর ছিল টেকনাফ থেকে ৫০ হাজার ইয়াবার একটি চালান আসছে, খবর পেয়ে সোনারগাঁওয়ের মেঘনা টোলপ্লাজায় তল্লাশি চৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় আসামির গাড়িকে সিগন্যাল দিলে এক কনস্টেবলকে আহত করে দ্রুত সেটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের আরেকটি টিম মোগড়াপাড়া এলাকায় ধাওয়া করে আসামি আলমগীর হোসেনকে গাড়িসহ এবং ৪২ হাজার ইয়াবা বড়িসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারের পর আসামিকে নিয়ে তারা সরাসরি জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে চলে আসে। এ সময় আসামিই গাড়ি চালায়। এসপি অফিসে তাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের পর এবার থানার ফেরার পথে আসামিকে নিয়ে থানায় রওনা দেন দুই এসআই ও এক এএসআই। তবে তাদের তিনজনের কেউই গাড়ি চালাতে পারেন না ফলে আসামিকে দিয়েই গাড়ি চালানো হয়। আসামি গাড়ি চালিয়ে সোনারগাঁওয়ের দত্তপাড়া এলাকায় এলে তিনি গাড়ি থেকে কৌশলে লাফিয়ে পড়ে গাড়ি খাদে ফেলে দেয়। এতে দুই এসআই মারা যান ও এএসআই গুরুতর আহত হন। এসময় আসামি পালিয়ে যায়।

সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম শফিকুল ইসলাম জানান, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং শেষে সোমবার সন্ধ্যার দিকে সোনারগাঁও থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী সালেহ আহম্মেদ, শরিফুল ইসলাম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রফিকুল ইসলাম প্রাইভেটকারযোগে থানায় ফিরছিলেন। পথে সোনারগাঁওয়ের দত্তপাড়া এলাকায় তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারটি খাদে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কাজী সালেহ আহম্মেদ ও শরিফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী টমটম চালক মোক্তার হোসেন জানান, সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে দত্তপাড়া বাদশা গ্যারেজের একটু সামনে একটি প্রাইভেটকার দ্রুতগতিতে এসে পুকুরে পড়ে যায়। গাড়িটি মহাসড়ক থেকে সোনারগাঁও থানার দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি পুকুরে মুহূর্তের মধ্যে পানিতে তলিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ও সোনারগাঁও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পুকুর থেকে পুলিশের তিন সদস্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আমার টমটম দিয়েই নিয়ে আসি। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *