Type to search

ওজনে ফাঁকি দিয়ে ধান ক্রয় অভয়নগরে কৃষকের সাথে প্রতারণা

অভয়নগর

ওজনে ফাঁকি দিয়ে ধান ক্রয় অভয়নগরে কৃষকের সাথে প্রতারণা

                                ওজনে ফাঁকি দিয়ে ধান ক্রয়
অভয়নগরে কৃষকের সাথে প্রতারণা

 

স্টাফ রিপোর্টার : যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারে ধান হাটায় প্রতিনিয়ত ধান বিক্রির সময় কৃষককে ওজনে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। আর এতে লাভবান হচ্ছে এক শ্রেণির আড়ৎদার। ভরা মৌসুমে আড়ৎদাররা ওজনে ফাঁকি দিয়ে প্রতিহাটে কৃষকের লক্ষাধিক টাকা লুটে নিচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারে সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার ধানের হাট বসে। প্রতিহাটে ১৫ থেকে ২০টি আড়তে প্রায় ৬শ থেকে ৮শ টন ধান বেচাকেনা হয়। অভয়নগর,মনিরামপুর, নড়াইল সদও থেকে কৃষকেরা এখানে ধান বিক্রি করতে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধানহাটার একজন ব্যবসায়ী জানান, এখানে কয়েকজন আড়ৎদার বেশি দামে ধান ক্রয় করে কম দামে বিক্রি করেও প্রতি হাটে হাজার হাজার টাকা লাভ করে। কারণ তারা ধান ক্রয়ের সময় মনপ্রতি (৪০ কেজি) এক কেজি ধান বেশি নেয় এটা সবাই জানে। এর বাইরে সুযোগ পেলেই তারা ওজনে ফাঁকি দেয়। বস্তায় আধা কেজি বা পৌনে এক কেজি ধান বেশি হলে তারা আমলে নেয় না। এতে কৃষকদেরকে গলা কাটা হয়। তবে এখানে কয়েকজন ভাল আড়ৎদারও আছেন।
গত মঙ্গলবার সকালে ধান হাটায় সরজমিনে ধান কেনাবেচার সময় ওজনে কৃষকদের ফাঁকি দেওয়ার এমন অহরহ চিত্র দেখা যায়। রাজলক্ষী ভান্ডারে দুপুর সাড়ে বারটায় ধান বিক্রি করছিলেন উপজেলার দেয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মাহমুদ শেখ। তিনি ছয়টি প্লাস্টিকের বস্তায় ব্রি ৩৯ ও গুটিস্বর্ণা ধান বিক্রির জন্য এনেছিলেন ওজন হয়েছিলো ২৮৩ কেজি ৭শ ৫০ গ্রাম। তিনি দাম পেয়েছেন ২৭৫ কেজির। তার কাছ ৮ কেজি ধান কেটে নেওয়া হয়েছে। যার দাম প্রায় ২৪০ টাকা।তিনি প্রথমে প্রতিবাদ করলেও পরর্বতীতে কিছু সময় নিরবে দাড়িয়ে থেকে আড়ৎদারের দেওয়া দাম নিয়ে চলে আসেন। ধোপাদী গ্রামের কৃষক নিত্যানন্দ পাল বলেন,“ আমি ওই আড়তে সঠিক ওজন পাব এই আশায় গত মঙ্গলবার মনপ্রতি ১০ টাকা কমে ধান বিক্রয় করি। আমার ছয়মন ছাব্বিশ কেজি ধান থেকে নয় কেজি ধান কেটে নেয় ওই আড়তের মালিক গৌর কুমার সাহা ওরফে পাগল । আমাকে ছয়মন সতের কেজির দাম দেওয়া হয়। এতে আমি ২শ ৩৬ টাকা ঠকেছি। রাজলক্ষী ভান্ডারের সামনে একটি আড়তে ধান বিক্রি করছিলেন মডেল কলেজ পাড়ার কৃষক সাইফুল ইসলাম। আড়তের বাইরে গলির ওপর স্কেল রেখে ধান মাপার সময় দেখাযায় তার একটি বস্তায় ওজন হয়েছে ৪৪ কেজি ৩শ গ্রাম। সেটা ধরা হয়েছে ৪৩ কেজি ওই কৃষকের অপর একটি বস্তায় ওজন হয়েছে ৪৭ কেজি ৮শ ৬০ গ্রাম। ওই কৃষকের ৯২ কেজি ১৬০গ্রাম থেকে তিন কেজি ১শ ৬০ গ্রাম ধান কেটে রেখে বাকি ধানের দাম দেওয়া হয়েছে। ওই স্কেলটির ডিজিট গুলো ঠিকমত জ¦লছিলো না ফলে ওই আড়তে ধান দেওয়া কৃষদের বোঝার বুপায় নেই তাদেও ধানের ওজন কত।
জানতে চাইলে রাজলক্ষী ভান্ডারের মালিক গৌর কুমার সাহা ওরফে পাগল ওজনে ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার কওে বলেন,“ আমাদেরকে মোটা ধান ৭০ কেজির বস্তায় আধা কেজি ধান বেশি দিতে এছাড়া বস্তার ওজন সশ থেকে আটশ গ্রাাম হলের মিলারা এক কেজি ধরে বাদ দেয়। এতে আমাদেও ধান বেশি থাকেনা। প্যাকিং করার সময় অনেক ধান পড়ে যায়।” তিনি বলেন,“ গত হাটে ৫৭ বস্তায় মাত্র ১৭ কেজি ধান উদ্বৃত্ত ছিলো।”
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি বলেন.“ কৃষরা জাতীর প্রাণ, তারা প্রতারিত হলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। এ কারণে যে সব আড়ৎদার কৃষকদের প্রতারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”