Type to search

উঠে যাচ্ছে সৃজনশীল পদ্ধতি

শিক্ষা

উঠে যাচ্ছে সৃজনশীল পদ্ধতি

উঠে যাচ্ছে সৃজনশীল পদ্ধতি আগামী বছর থেকে চার শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম

আগামী বছর থেকে নতুন কারিকুলামে প্রবেশ করতে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের শুরুর বছরে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন বই দেওয়া হবে। এরপর ২০২৫ সালের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে সব শ্রেণিতে বাস্তবায়ন হবে।

নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী, বিষয় ও পরীক্ষা কমিয়ে বইয়ে আনা হয়েছে পরিবর্তন। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর হবে। দশম শ্রেণির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক নাকি ব্যবসায় শিক্ষায় পড়বে, সেটি ঠিক হবে উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে। নতুন কারিকুলামে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুই দিন।

তবে এই কারিকুলামে পরীক্ষার প্রশ্ন পদ্ধতি কী হবে এ বিষয়টি নিয়েই সবার আগ্রহ রয়েছে। কারণ চলমান সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ভীতি এখনো রয়েছে। তাই তারাও চাইছেন এ পদ্ধতি না থাকুক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের পর পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি থাকবে না। কোন পদ্ধতির আলোকে প্রশ্ন থাকবে তা প্রকাশ করা হবে নভেম্বরে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ ইত্তেফাককে জানান, সৃজনশীল পদ্ধতিতে আগামী বছর থেকে তো আর পরীক্ষা থাকছে না। উন্নত বিশ্বের পরীক্ষা পদ্ধতির আলোকেই তৈরি করা হয়েছে। একই তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। তিনি ইত্তেফাকের কাছে বলেছেন, নতুন কারিকুলামে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকছে না। সেখানে অন্য রকমের প্রশ্নপত্র হবে।

মুখস্থনির্ভর পড়াশুনার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধা যাচাই করার লক্ষ্যে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু হয়েছিল। ২০০৮ সাল থেকে দেশে যখন এটি চালু করা হয়, তখন বলা হয়েছিল, এই পদ্ধতিতে নোট-গাইড বই থাকবে না, কোচিং-প্রাইভেট বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু ফল হয়েছে উলটো। শিক্ষকরাই বিষয়টি ভালোভাবে না বোঝায় শিক্ষার্থীদের কোচিং-প্রাইভেট বা সহায়ক বইয়ের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে আগের চেয়ে আরো বেশি। অভিভাবকদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভীত রয়েছেন শিক্ষকরাও। প্রায় ৪২ ভাগ শিক্ষকের এ বিষয়ে ধারণা নেই। এসব কারণে এ পদ্ধতি বাতিলের দাবি ছিল শুরু থেকেই। অনেকেই মনে করছেন, সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করাই ছিল শিক্ষায় সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। যার খেসারত দিয়েছে সবাই।

নতুন কারিকুলামে আরো যা থাকবে

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা হবে দুই বছরমেয়াদি। শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, প্রথম ও তৃতীয় শ্রেণির আগে স্কুলে কোনো পরীক্ষা থাকবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন হবে। প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে শতভাগ। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ। সামষ্টিক মূল্যায়ন ৪০ শতাংশ। স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা ও শিল্পকলায় শিখনকালীন মূল্যায়ন ১০০ শতাংশ।