Type to search

আমডাঙ্গা খালটি দুইশত ফুট চওড়া করার দাবি

অভয়নগর

আমডাঙ্গা খালটি দুইশত ফুট চওড়া করার দাবি

 

স্টাফ রিপোর্টার
ভবহদ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ আমডাঙ্গা খাল পরিদর্শন করেছেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে সংগ্রাম কমিটির একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত খালের উপর থাকা চারটি ব্রিজের পরিমাপসহ খালের বিভিন্নস্থানের বেড়, গভীরতা ও পানির উচ্চতা পরিমাপ করেন। পরিদর্শন শেষে সংগ্রাম কমিটি খালটি ২০০ ফুট চওড়া ও গভীর করার দাবি জানিয়েছে।

জানা গেছে, যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলা, যশোর সদরের আংশিক এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার ৫৪টি বিলের পানি ভবদহের শ্রী নদীর উপর নির্মিত ২১ ভেন্ট দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। কিছু পানি আমডাঙ্গা খাল দিয়ে নিষ্কাশিত হয় কিন্তু পলি পড়ে এলাকার পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদী নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে না। এই অবস্থায় গত আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বৃষ্টির পানিতে এলাকার বিলগুলো প্লাাবিত হয়েছে। বিল উপচিয়ে পানি ঢুকেছে শতাধিক গ্রামে। প্রায় দুই লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনজাপন করছে। পানি নিস্কাশনের বিকল্প পথ আমডাঙ্গা খাল দিয়ে সামান্য পানি সরছে। কিন্তু খালের মধ্যে জমা হয়ে যাওয়া পলি, কচুরীপানা এবং খালের ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত ব্লক পড়ে পানি অপসারণে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।
সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ গতকাল খালের উপর থাকা চারটি ব্রীজের পরিমাপসহ খালের বিভিন্নস্থানের বেড়, গভীরতা ও পানির উচ্চতা পরিমাপ করেন। তারা বলেন, খালের প্রশস্ত সর্বোচ্ছ ৪৫ ফুট আবার কোথাও ২০ ফুট। খালের কোথাও ১০ ফুট আবার কোথাও ২৫ ফুট এলাকা জুড়ে পানি যাচ্ছে। খালের অনেক জাগায় ভেঙ্গে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত ব্লক পড়ে পানির গতি বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। খালের উপর নির্মিত চারটি ব্রিজ অপরিকল্পিতভাবে করা। খালের পশ্চিমপাশে বালিয়াডাঙায় নির্মিত সেতুটি মাত্র ১৩ ফুট প্রশস্ত। বিলের তলদেশ হতে ব্রিজগুলোর নি¤œাংশ দেড় থেকে আড়ায় ফুট উচু। ফলে অধিকাংশ বিলের তলদেশের পানি এই খালদিয়ে নিষ্কাশিত হবে না। এ অবস্থায় এলাকায় বোরোধান করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
খাল পরিদর্শন শেষে নেতৃবৃন্দ আমডাঙ্গায় মহাসড়কের পাশে এক আলোচনা সভায় মিলিত হন। এ সময় বক্তব্য রাখেন ভবহদ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রনজিত বাওয়ালী, সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল, চলিশিয়া ইউনিয়ন কমিটির আহবায়ক ডাঃ শহিদুল হক, সদস্য সচিব শিববপদ বিশ্বাস, সুন্দলী ইউনিয়ন কমিটির সদস্য সচিব কানু বিশ্বাস, হাজিরহাট এলাকার সভাপতি ভগিরত হালদার, ডহর মশিয়াহাটি কমিটির আহবায়ক ব্রজেন বিশ্বাস, নেবুগাতি গ্রাম কমিটির যুগ্ম আহবায়ক বৈকুন্ঠ বিশ্বাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালীপনা ও অদূরদর্শিতার কারণে খালের উপর নির্মিত ব্রিজচারটির একটিও পরিকল্পিতভাবে করা হয়নি। প্রত্যেকটি ব্রিজ সংকির্ণ এবং বিলের তলদেশ হতে ব্রিজগুলোর নি¤œাংশের পাটাতন দেড় থেকে আড়ায় ফুট উচু করে করা হয়েছে। তারা বলেন, ভবদহে টিআরএম পুনর্বহালের পাশাপাশি জমি অধিগ্রহণ করে এ খালটি ২০০ ফুঠ চওড়া এবং গভীর করলে এবং ব্রিজগুলো পূনরায় পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ৮/১০ টি বিলের পানি নিষ্কাশিত হবে। বাড়িঘরে পানি উঠলেও তা দ্রুত নেমে যাওযার সম্ভাবনা থাকবে।
জানতে চাইলে ভবহদ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রনজিত বাওয়ালী বলেন,‘ আমডাঙ্গা খালটি ২০০ মিটার চওড়া এবং পরিমানমত গভীর, ব্রিজগুলো ভেঙে পূনরায় বড় করে পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করলে ভবদহের উত্তর এলাকায় ৮ থেকে ১০ টি বিলের জল সরে যাওযার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভবদহ এলাকায় বসবাস করতে হলে পর্যাযক্রমে এলাকার বিলে টিআরএম চালুর বিকল্প কিছু দেখি না।’ তিনি অবিলম্বে সরকারকে বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালুর দাবি জানান।