Type to search

অভয়নগরে সংবাদ সংগ্রহকালে শিক্ষকদের হাতে দুই সাংবাদকর্মী হেনস্থার শিকার

অভয়নগর

অভয়নগরে সংবাদ সংগ্রহকালে শিক্ষকদের হাতে দুই সাংবাদকর্মী হেনস্থার শিকার

স্টাফ রিপোর্টার 

যশোরের অভয়নগরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বরাদ্দকৃত প্রকল্পের কাজের তথ্য সংগ্রহ কালে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে এলাকাবাসীকে ডেকে দুই সংবাদকর্মীকে হেনস্থা করেছেন। উপজেলার ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে। হেনস্থার শিকার সংবাদকর্মীরা হলেন স্থানীয় দৈনিক যশোর পত্রিকার প্রতিনিধি এইচ এম জুয়েল রানা এবং দৈনিক প্রভাতফেরী পত্রিকার প্রতিনিধি মিঠুন দত্ত । তাঁরা অপরাজেয় বাংলা নিউজ পোর্টালের স্টাফ রিপোর্টার।
ওই সংবাদকর্মীরা জানান, তারা উপজেলার ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার দুপুরে সরকারি বরাদ্দকৃত টাকার কাজ সঠিক নিয়মে হয়েছে কি না এ তথ্য সংগ্রহ করতে যান। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পলাশ মল্লিক এর কাছে সাংবাদকর্মীরা ২০১৯/২০ অর্থ বছরে বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ বরাদ্দকৃত দুই লাখ টাকা, স্লিপ ফান্ডের ৪৫ হাজার ২৫০ টাকা ও চলতি অর্থ বছরের (২০২০-২১) রুটিন মেইনটেন্যান্স বাবদ ৪০ হাজার টাকা ও স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দকৃত টাকার কাজের তথ্য জানতে চায়। প্রধান শিক্ষক সংবাদকর্মীদের বরাদ্দকৃত প্রকল্পের ব্যয়ের ভাউচার সমুহ দেখায়। এ সময়ে সংবাদকর্মীরা ব্যয়ের সাথে প্রকল্পের কাজের অমিল দেখে ছবি তোলেন। তখন ওই বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থিত ডুমুরতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫জন শিক্ষক সাংবাদকর্মী দেখে সেখানে উপস্থিত হয়। এ সময় নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক স্থানীয় বাসিন্দা কমলেশ টিকাদার সাংবাদকর্মীদের কাজে বাধা সৃষ্টি করে। এবং একই সাথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪জন শিক্ষক কমলেশ টিকাদারের সাথে যোগ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে শিক্ষক কমলেশ টিকাদার এলাকার লোকজনদের ফোনকরে বলতে থাকেন, ‘ দুই সাংবাদিক আমাকে মারধোর করেছে ও ম্যাডামদের শ্লীলতাহানী করেছে আপনারা আসেন ওদের সাইজ করতে হবে।’ মোবাইলে এই সংবাদ দেওয়ার সাথে সাথে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্র গতিতে এসে ওই দুই সাংবাদকর্মীর ওপর আক্রমণ করে।
তারা ওই দুই সংবাদবাদকর্মীর ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। বিদ্যালয় থেকে তোলা সকল ছবি মুছে দেয় এবং তাদের ছবি তুলে নেয়। সাংবাদকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর করতে উদ্যত হয়। তখন সংবাদ কর্মীরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য হাত জোড় করে বলেন, ‘আমরা আপনাদের বিদ্যালয়ের কোন সংবাদ প্রকাশ করবোনা আমাদের ক্ষমা করেন।’ এরপরও তারা গালিগালাজ করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত অর্থ বছরের বরাদ্দের অর্থ দিয়ে নামমাত্র কাজ করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরের রুটিন মেইনটেন্যান্স এবং ক্ষুদ্র মেরামতের কাজ দেখতে চাইলেও প্রধান শিক্ষক তা দেখাতে চান নি। বিদ্যালয়ে দেওয়া সরকারি ল্যাপটপটি সেখানে পাওয়া যায়নি। ল্যাপটপের ব্যপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা ফিরোজা খাতুন বলেন,‘ ল্যপটপটি দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে ছিল। কিছু দিন আগে কাজ শেখার জন্য ল্যাপটপটি আমি আমার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছি।
ডুমুরতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কমলেশ টিকাদার বলেন,‘ আমি সাংবাদিকদের ছবি তুললে তারা ক্ষিপ্ত হয়। আমি মাফ চাই তারপরও একজন সাংবাদিক আমার গায়ে হাত দেয়।এরপর প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি অনিমেষ বাবুকে ডেকে আনি। এরপর ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হলে তারা চলে যায়।’
ডুমুরতলা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পলাশ মল্লিক হেনস্থার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন,‘ সাংবাদিকদের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। কমলেশ টিকাদার সাংবাদিকদের ছবি তুলতে গেলে তারা নিষেধ করে। এরপর তিনি তাদেরকে জলে ডুবে যাওয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছবি তুলতে বলেন। তাদের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া বা হেনন্থা করা হয়েছে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
অভয়নগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: মাসুদ করিম বলেন,‘ সংবাদকর্মীদের হেনস্থা ও ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই। আমাকে একটু সময় দেন আমি বিষয়টি জেনে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।