Type to search

অভয়নগরে প্রধানমন্ত্রী’র উপহার গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ প্রকল্প কাজে বাঁধা

অভয়নগর

অভয়নগরে প্রধানমন্ত্রী’র উপহার গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ প্রকল্প কাজে বাঁধা

বসতভিটা থেকে দখল উচ্ছেদ না করার জন্য আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সরকাবের বিরুদ্ধে অতি: জেলা প্রশাসক, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তাকে বিবাদী করে মামলা।

 

স্টাফ রিপোর্টার:উপজেলার পুড়াটাল গ্রামে অবস্থিত প্রায় ৫০ বছর যাবৎ বসবাসকারি ভূমিহীন ওয়াদুদ গাজীর বংসধরদের বাস্তবাড়ি আরএস সরকারি খাস ১/১ খতিয়ান ভূক্ত আর এস ৪৩০ দাগের ৪৪ শতাংশ জমি ও অন্য একটি দাগে আরো ২৪ শতাংশ জমি থেকে দখল উচ্ছেদ না করার জন্য আদালতে স্থায়ী ও অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সরকারের বিপক্ষে মোকাম যশোর অভয়নগর সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং দেওয়ানী -২৪/২২ তারিখ ১৬-০১-২০২২।
মামলার বাদি পক্ষের উকিল লতিফুর রহমান খোকন জানান, ওই জমিতে বসবাসকারি হামিদ গাজী, আমজেদ গাজী, আলমগীর গাজী ও সেলিম গাজী বাদি হয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে যশোরের জেলা প্রশাসক, অতি: জেলা প্রশাসক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভয়নগর ও অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কেন নিষেধাজ্ঞার আদেশ হবে না এই মর্মে কারণ দর্শানো/ সমন ও মূল সমন জারি হওয়া সত্তে¡ও উক্ত আদেশ উপেক্ষা করে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) অভয়নগর , প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে গাছ কর্তণ করিয়াছে এবং বাদি সেলিম গাজীর ঘর ভাঙ্গিয়া দিয়েছে।

পুড়াটাল গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি হাজী আব্দুল লতিফ (৭০) বলেন, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে ওয়াদুদ গাজীর চার ছেলে ও দুই মেয়ে পৃথক পৃথক বাড়ি নির্মাণ করে সরকারি ওই জমিতে বসবাস করে আসছেন। তারা সকলেই ভূমিহীন, ‘ওয়াদুদ গাজীর দুই ছেলে ভ্যান চালায় ও অপর দুই ছেলে দীন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।্ এ ছাড়া তার আরো দুই মেয়ে ও জমিতে বসবাস করে, তারা মিল শ্রমিকের কাজ করে। বর্তমানে ওয়াদুদ গাজীর বয়স প্রায় শতবছর। তিনি অতিশয় বৃদ্ধ। তার দখলীয় জমিতে কোন নোটিশ না দিয়েই গাছ গালা কাটা ও ঘর দোর ভাঙ্গা শুরু করেছে ভূমি অফিসের লোকজন। তা দেখে ওয়াদুদ গাজী হার্টফেল ও করতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।’ স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জেন আবুল হোসেন(৯০) বলেন, এখানে বসবাস কারি সবাই ভূমিহীন, শুনছি এদের উচ্ছেদ করে প্রধান মন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর বাড়ি বানাবে। এরাও তো ভূমিহীন এদের উচ্ছেদ করলে এরা কোথায় যাবে।
বৃদ্ধ ওদুদ গাজী(৯৫) বলেন,‘ আমার পিতা ওই জমিতে প্রথম বসতি স্থাপন করে। সেই থেকে আমি ছেলেমেয়ে নিয়ে এখানে বসবাস সকরে আসছি।’
সরজমিনে গত রোববার বিকালে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখা যায়, ওয়াদুদ গাজীর দখলে থাকা ওই জমি থেকে চারা ও মাঝারি আকারের প্রায় শতাধিক মেহগনি গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো কিছু ফলদ গাছ কাটা হয়েছে। আমজাদ গাজীর মুরগীর খামার, গোয়ালঘর, খড়ের ঘর ও সেলিম গাজীর শতাধিক কলাগাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। সেখানে একটি সাইন বোর্ড ঝুলানো হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে- “মুজিব বর্ষে প্রধান মন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের বাড়ি নির্মার্ণের নির্ধারিত স্থান”।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট প্রেমবাগ ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমি এসিল্যান্ডের নির্দেশ পেয়ে এ কাজ করেছি, আপনি উনাকে জিজ্ঞাসা করেন’। দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি কমিশনার (ভূমি) (এসিল্যান্ড)  তানজিলা আখতার বলেন, ‘আমি আদালতের কোন নোটিশ পাইনি, পাইলে জবাব দেবো। তিনি আরো বলেন, ওরা প্রকৃত ভূমিহীন হলে উনাদেরও বাড়ি দেওয়া হবে।’