Type to search

অভয়নগরে পিতাকে পিটিয়ে আহত করে ২ সন্তান পলাতক

অভয়নগর

অভয়নগরে পিতাকে পিটিয়ে আহত করে ২ সন্তান পলাতক

ডেক্স রিপোট:
সিঙ্গাপুর ফেরত দুই ছেলের অত্যাচারে জীবন সংকটে পড়েছেন অভয়নগরের এক অসহায় বৃদ্ধ। একের পর এক সন্তানদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে এখন নিজেই জীবন বিসর্জন দিতে চান তিনি। সন্তানদের বড় করে নিজের টাকায় প্রবাসে পাঠিয়েও তাদের আয়ের একটি টাকা তো ভোগ করেনইনি, উপরোন্ত নিজের ৫০ বিঘা জমি ভাগ বাটোয়ারা করে না দেয়ায় দুই ছেলে রোজাদার পিতাকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ইফতারির আগ মুহুর্তে উপজেলার বনগ্রাম গ্রামে। এর আগে ওই দুই সন্তান সম্পত্তি নিয়ে পিতার দাঁড়ি কেটে গলায় জুতার মালা পড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অসহায় ওই পিতা। বর্তমানে তিনি অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
অসহায় এ বৃদ্ধ পিতার আহাজারি আর আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তিনি এ প্রতিবেদকের সামনে আহাজারি করে বলেন, নাবালক অবস্থায় পিতাকে হারিয়েছি। তারপর কঠোর পরিশ্রম করে সন্তানদের ভবিষ্যত সুখের কথা চিন্তা করে ৫০ বিঘা সম্পত্তি ধরে রেখেছি। আর সেই সন্তানদের হাতে দিনের পর দিন মার খাচ্ছি। এ জীবন আমি আর রাখব না। তবে মরার আগে সন্তানদের বিচার দেখে যেতে চাই। বলে তিনি দু’হাত উপরে তুলে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান।
সন্তানদের হাতে নির্যাতিত পিতা শওকত হোসেন মোল্যা (৫৩) অভয়নগর উপজেলার বনগ্রাম গ্রামের মৃত হাজী হাসান আলী মোল্ল্যার ছেলে।
ঘটনার পর থেকে শওকত মোল্যার দুই ছেলে আল আমিন (৩০) ও আজাদ (২৫) পালিয়েছে।
শওকত মোল্যা বলেন, জমিজমা নিয়ে প্রায়ই দুই ছেলে আমাকে মারপিট ও নির্যাতন করে। আমি ওদের বাড়ি করার জন্য দুটি ভিটা দিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া সিঙ্গাপুর থেকে যত টাকা আয় করেছে তা স্পর্শও করিনি। তবুও রোজ জমি ভাগ করে দেয়ার জন্য আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারপিট করে। কিছুদিন আগে আমার দাঁড়ি কেটে গলায় জুতার মালা পড়িয়েছে ওরা। লোকলজ্জায় আমি কাউকে বলিনি। আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ৩০ বছরের একটি তালগাছ ওরা গোপনে বিক্রি করেছে। ওই গাছ ব্যাপারি কাটতে আসলে আমি গিয়ে ব্যাপারিকে বলেছি আমার কাছে তো একটু শুনতে পারতো। এ কথা বলতেই পাশে থাকা দুই ছেলে বাঁশের লাঠি এনে আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। আমি তাদের কাছে অনুনয় বিনয় করে বলেছি, ‘বাবা, আমি রোজা আছি আমাকে তোরা মারিসনা।’ তারপরও তারা আমাকে বেদম পিটিয়েছে। প্রতিবেশিরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বড় ছেলে আল আমিনের ০১৯৪৪-২৮০১০৭ নম্বরে ফোন করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর থেকে দুই ছেলে পালিয়েছে। গ্রামবাসীও এবার দুই ছেলের উপর মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয়ে আছে। তারা ওই দুই ছেলেকে খুঁজছে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিৎ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *