Type to search

অভয়নগরে পরিকল্পনাহীন মৎস্য ঘের, স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশংকা!

অভয়নগর

অভয়নগরে পরিকল্পনাহীন মৎস্য ঘের, স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশংকা!

স্টাফ রিপোর্টার :  যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন বিলে মাছ চাষে উদ্ভুদ্ধ হয়ে যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে তৈরী হচ্ছে মৎস্য ঘের। কোন ধরণের পরিকল্পনা কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার নিয়ম-নীতি না থাকায় যার যেখানে জমি রয়েছে ইচ্ছা মাফিক তৈরী করছে এই মৎস্য ঘের। যে কারণে স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন এলাকাবাসি। এলাকাবাসি জানান, ভবদহের স্থায়ী কোন সমাধান না হওয়ায় এমনিতে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়ে রয়েছে। কিছু কিছু বিলের পানি শুস্ক মৌসুমে নিচে নেমে গেলেও জলাবদ্ধ এলাকার অধিকাংশ বিলের জমি অনাবাদি রয়ে গেছে। ফলে জমি মালিকেরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ফসলী জমিতে ফসল ফলানোর আশা বাদ দিয়ে এখন বিকল্প হিসেবে তৈরী করছে মৎস্য ঘের। একদিকে দেশে কমছে ফসলী জমি অন্যদিকে তৈরী হচ্ছে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা। বৃষ্টি মৌসুমে আবাসিক এলাকার পানি গড়িয়ে নিচু এলাকা অর্থাৎ বিলে গিয়ে পড়ে। কিন্তু বিলে পানি যাওয়ার পথে নতুন অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের তৈরীর হিড়িক। পানি যাওয়ার কোন জায়গা না রেখে যার জমি যেখানে আছে কেউ একটুও ছাড় দিতে রাজি হচ্ছেন না। একজনের ঘেরের পাড়ে আরেকজন পাড় লাগিয়ে মৎস্য ঘের তৈরী করছে। ফলে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ হচ্ছে। এছাড়া অভয়নগরের ভৈরব উত্তর-পূর্ব জনপদের বিভিন্ন বিলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য বড় খালের ব্যবস্থা থাকলেও তাতে পানি পড়ার কোনো রাস্তা নেই। খালের পাড়ই ঘেরের পাড় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অভয়নগরের জয়খোলা গ্রামের চাষীরা জানান, খালের পাড়কে ঘেরের পাড় এবং আমার জমিতে আমি করবো এই স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় প্রতি বছর। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় ফসল। শ্রীধরপুর ইউনিয়নের জৈয়ের বিলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে খালের ব্যবস্থা করার ফলে প্রায় দুইশত বিঘা জমির ফসল বেঁচে যাবে। তবে তা যদি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের তদারকিতে হতো তাহলে আরো ৩০০ বিঘা জমির ফসল নিয়ে আশংকায় থাকতে হতো না, এমনটাই জানান এলাকাবসী। আসছে বর্ষা মৌসুমে পানির চাপ বেড়ে গেলে আবাসিক এলাকায় পানি জমে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। আবার কোথাও কোথাও পানি প্রবাহের সরু জায়গা রাখা হলেও পানির গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়া হচ্ছে। এতে পানি সঠিকভাবে প্রবাহ হবে কি/না সে ব্যাপারে কারো মাথা ব্যাথা নেই। আবার অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে পাকা কিংবা কাঁচা সড়ককে মৎস্য ঘেরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে অল্পদিনে ওই সড়কের বেহাল দশা তৈরী হচ্ছে। কোথাও কোথাও ঘেরের মধ্যে বিলিন হচ্ছে রাস্তা। গত কয়েকদিন আগে ধোপাদী গ্রামের ধোপাপাড়া এলাকার একটি রাস্তা গিলে খাচ্ছে মৎস্য ঘের এমন অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জমা হলেও কার্যকরী কোন ভূমিকা দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। ফলে এলাকাবাসির দাবি, মৎস্যঘের তৈরী করতে হলে সড়ক থেকে নিরাপদ দুরত্ব ও উপরের পানি নিচে নামার জন্য সুনির্দিষ্ট পথ রেখে মৎস্য ঘের তৈরী করতে হবে। অন্যথায় প্রতি বছর বর্ষায় এ ভোগান্তিতে পড়তে হবে সাধারণ মানুষের। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কার্যকর ভূমিকা রাখার দাবি ভুক্তভোগীদের।