Type to search

অভয়নগরে খাদ্যবান্ধবের ডেটাবেজ তৈরিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

অভয়নগর

অভয়নগরে খাদ্যবান্ধবের ডেটাবেজ তৈরিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

নওয়াপাড়া অফিস
যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অনলাইন ডেটাবেজ তৈরিতে টাকা নেওয়া হচ্ছে। ওই ইউনিয়নে অনলাইন নিবন্ধনের কথা বলে দ:ুস্থ উপকারভোগীদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য(মেম্বার) ওই টাকা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অনিয়ম দূরীকরণে তালিকা সঠিকভাবে তৈরি ও ডুপ্লিকেশন রোধ করতে ডিজিটাল ডেটাবেজের উদ্যোগ নেওয়া হয়। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র জনসাধারণকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা দিতে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে ১৫টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ (বিক্রি) কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পর্যায়ে বসবাসরত বিধবা, বয়স্ক, পরিবারের প্রধান নারী, নিম্ন আয়ের দুস্থ পরিবার প্রধানদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার জন্য একটি তালিকা রয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে উপকারভোগীর তালিকা হতে মৃত, স্বচ্ছল, ভুঁয়া এবং এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবর্তে প্রকৃত হতদরিদ্রদেরকে অন্তুর্ভুক্ত করার নিয়ম রয়েছে। গত ৩১ আগস্টের মধ্যে উপকারভোগীর তথ্য ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির জন্য যাচাই শেষ করার কথা। পরে তা বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ উপকারভোগী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে উপজেলা কমিটিতে পাঠায় এবং উপজেলা কমিটি তা অনুমোদন করে। উপজেলা কমিটি অন্য খাদ্যনিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত নন, এমন হতদরিদ্র প্রতি পরিবারের একজনের নামে ছবিসহ কার্ড ইস্যু করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সদস্যসচিব। অনলাইনে নাম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে উপকারভোগীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই।
অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য(মেম্বার) রাজু সরদার ওয়ার্ডের ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরিতে অনলাইন নিবন্ধনে ১৭০ জন উপকারভোগী দুস্থদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নিয়েছেন।
ওই ওয়ার্ডের অভয়নগর গ্রামের শহিদুল শেখ একজন উপকারভোগী। তিনি বলেন,‘ ১৫ টাকার চাল তুলতে গেলে নাম অনলাইন করার কথা বলে রাজু মেম্বার আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়েছেন।’ বগুড়াতলা গ্রামের দিনমজুর ফারুক গাজী বলেন, আমি গত রোববার ডিলারের কাছে চাল কিনতে গেলে দেখি সেখানে রাজু মেম্বার বসে আছে। ডিলার ৩০ চালের দাম ৪৫০ টাকা নিয়েছে আর আর অনলাইনের নিবন্ধনের কথা বলে রাজু মেম্বার ২০ টাকা নেই। মোট আমার কাছ থেকে তারা ৪৭০ টাকা নিয়েছে। বাণীপুর গ্রামের অপর উপকারভেঅগী খানজাহান শেখ বলেন,‘চাল তুলতে গেলে রাজু মেম্বার নাম নিবন্ধনের জন্য আমাকে ২০ টাকা দিতে বলে। আমি চালের দাম ৪৫০ টাকার বাইরে আরও ২০ টাকা দিয়ে চাল নিয়ে আসি।’
জানতে চাইলে বাঘুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শেখ তৈয়বুর রহমান বলেন,‘ ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরিতে অনলাইন নিবন্ধনে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাজু মেম্বার টাকা নিয়েছে এমন খবর আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিনা খানমের সেলফোনে কয়েকবার ফোন করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ড বলেন, ‘প্রত্যেক উপকারভোগির অনলাইন নিবন্ধনের জন্য সরকারি ভাবে ১৫ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া আছে। এ কাজে উপকারভোগিদের কাছ থেকে কোন টাকা যাবে না। নিবন্ধনের জন্য কেউ টাকা নিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *