Type to search

অভয়নগরে ইউরিয়ার সাথে সকল সারের মূল্য বৃদ্ধি

অভয়নগর

অভয়নগরে ইউরিয়ার সাথে সকল সারের মূল্য বৃদ্ধি

শেখ আতিয়ার রহমান, অভয়নগর
চলতি আমন মৌসুমে যশোরের অভয়নগরে সকল প্রকার রাসায়নিক সারের মুল্য ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে প্রতি কেজি সার ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে ক্রয় করছে কৃষক।
টিএসপি সরকার নির্ধরিত মূল্য প্রতিকেজি ২২ টাকা যা বাজারে বিক্রি হচ্ছে তিউনেশিয়া দেশীয় প্রতি কেজি ২৯ থেকে ৩২ টাকা, টিএসপি মরক্কো ২৪ থেকে ২৫ টাকা। ডিএপি প্রতি কেজি ১৬ টাকার স্থলে ২০ থেকে ২১ টাকা। মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ১৫ টাকার স্থলে প্রতি কেজি ২৭ থেকে ২৮ টাকা দামে কিনতে হচ্ছে বিক্রি হচ্ছে। ন্যায্যমুল্যে সার ক্রয় করতে পারছে না। এ ছাড়া ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে কেজি প্রতি ১৬ টাকা দামে ক্রয় করা সার ২১ টাকা দামে বিক্রি করছে ডিলাররা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রাসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলায় চলতি বছরে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৫ শত ৩৫ হেক্টর। উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিসিআইসি ডিলার রয়েছে ১৩ জন এবং বিএডিসির ডিলার রয়েছে ২৪ জন। এছাড়া খুচরা ডিলার রয়েছে ৭৪ জন। গত জুলাই মাসে ইউরিয়া বরাদ্দ ছিল ৫৪৩ মে:টন, টিএসপি ১১১ মে: টন, এমওপি ১৯০ মে:টন, ডিএপি ২৯৩ টন।
সরকার বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক সারের ওপর ভুর্তকী প্রদান করে। খুচরা কৃষকদের নিকট প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ইউরিয়া সারের সরকারী খুচরা মুল্য ৮ শত টাকা, বর্তমানে প্রতি কেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধির ফলে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ১ হাজার ১ শত টাকা, টিএসপি ১ হাজার ১০০ টাকা, ডাই এ্যমোনিয়া ফসফেট ৮’শ টাকা, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ৮ শত টাকা বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী সার বিক্রয় করার সময় কৃষকদের নাম ঠিকানা রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করার কথা থাকলে তা করা হয় না। মনগড়া তালিকা করে কৃষি অফিসের কর্তাদের ম্যানেজ করে জমা দেয়া হয়।
ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধির পর অভয়নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে,প্রতিবস্তা ইউরিয়া সার বিক্রয় হচ্ছে ১১’শ ৫০ (কেজি ২৩ টাকা)টাকা, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি লেবানন) ১ হাজার ৬’শ টাকা, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি মরক্কো ও জর্ডান) ১ হাজার ৪’শ ২০ টাকা, ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ১ হাজার টাকা। মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ১ হাজার ৪ শত টাকা।
কৃষকরা অভিযোগ করেছে, প্রতিকেজি ইউরিয়া সার খুচরা দোকানদাররা ২৩ টাকা করে বিক্রি করছে। টিএসপি তিউনেশিয়া প্রতি কেজি ২৯ থেকে ৩২ টাকা, টিএসপি মরক্কো ২৪ থেকে ২৫ টাকা ডিএপি প্রতি কেজি ২০ থেকে ২১ টাকা, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) প্রতি কেজি ২৭ থেকে ২৮ টাকা দামে কিনতে হচ্ছে। আবার খুচরা বিক্রেতা এবং ডিলাররা অভিযোগ করেছেন তাদের কাছ থেকে পাইকারী বিক্রেতারা বেশি দাম রাখছে তাই তারা ন্যায্যমূল্যে সার বিক্রয় করতে পারছে না।
উপজেলার বগুড়াতলা গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন “ ভাটপাড়া বাজার থেকে প্রতি কেজি ইউরিয়া ২৪ টাকা, টিএসপি ৩১ টাকা,এমওপি ২৬ টাকা করে সার কিনেছি। দাম কম হবে কিনা বললে সার বিক্রি করতে চাইনি।
উপজেলার পাথালিয়া গ্রামের কৃষক আবুল হাসান বলেন, বর্নী বাজার থেকে প্রতি কেজি ২৩ টাকা দরে ইউরিয়া, টিএসপি ৩২ টাকা,এমওপি ২৮ টাকা দিয়ে সার কিনেছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সাব ডিলার বলেন, ডিলাররা বরাদ্দের সার আনতে গেলে সার কম দিয়ে বেশী বস্তা লিখে সই করিয়ে নেয়। রাজী না হলে কৃষি কর্মকর্তাকে বলে ডিলারশীপ বাতিল করে দেবে বলে হুমকি দেয়। আমদানী কারকদের কাছে সার আনতে গেলে ভাল ব্যবহার করে না। দাম বেশী নিলেও আমরা অসহায়। যে কারণে আমরাও বেশী দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই।
অভয়নগর উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মো: গোলাম সামদানী বলেন, ‘বাড়তি দামে সার বিক্রি হচ্ছে এমন অভিযোগ আমাকে কেউ করেনি। আমরা প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করে থাকি। আমাকে কেউ অভিযোগ করলে আমি অবশ্যাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’