Type to search

মসজিদ কমিটি পরির্বতন চেয়ে আইএস লেখা চিরকুটে হুমকি

জাতীয়

মসজিদ কমিটি পরির্বতন চেয়ে আইএস লেখা চিরকুটে হুমকি

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স: রাজশাহী নগরীর টিকাপাড়া জামে মসজিদের মসজিদ কমিটি পরিবর্তনের কথা জানিয়ে আইএসের (ইসলামিক স্টেট) নামে পর পর তিনটি চিরকুটে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ হুমকি পর থেকে টিকাপাড়া মসজিদ কমিটির সদস্য ও নামাজ পড়তে আসা সাধারণ মুসল্লিরা আতঙ্কে রয়েছে।
গত ৫ নভেমর প্রদানকৃত প্রথম চিরকুটে বাংলায় লেখা রয়েছে, ‘টিকাপাড়া মসজিদের কমিটি পরিবর্তন করুন।’ এরপর ইংরেজিতে লেখা রয়েছে ‘আইএস’, পরে লেখা আছে- ‘হুমকি’।
গত ১২ নভেম্বর দ্বিতীয় চিরকুট দেওয়া হয়। তাতে লেখা রয়েছে, ‘চোর কমিটি পরিবর্তন করুন।’ সেখানেও ‘আইএস’ ও ‘হুমকি’ লেখা রয়েছে।
সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর প্রদানকৃত তৃতীয় চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘মসজিদ কমিটি পরিবর্তন করুন। ছোট হুমকি বড় পরিণতি হয়।’ এই চিরকুটেও ‘আইএস’ লিখে পাশে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে এবং নিচে একটি আরবি হরফের মতো পেঁচানো ওই চিরকুটে স্বাক্ষর রয়েছে।
এ বিষয়ে টিকাপাড়া মসজিদের মাদরাসা কমিটির সদস্য মো. সেলিম কচি বলেন, ‘তিন তিনটি চিরকুট পেয়েছে মসজিদ কমিটি। এনিয়ে বেশ আতঙ্কেই রয়েছি।’
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় টিভি পত্র-পত্রিকায় দেখি মসজিদে বোমা হামলা হয়েছে। বলা যায় না, কখন কে কোন ঘটনা ঘটায়। তাই বেশ আতঙ্কের মধ্যেই মসজিদে নামাজ পড়তে হচ্ছে।
নাসিমুল হক নামের আরেক মুসল্লি বলেন, টিকাপাড়া জামে মসজিদ ‘কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বার বার বলার পরও তারা কর্নপাত করছে না। বিষয়টি ছোটভাবে দেখলে তো হবে না। কোনো ঘটনা ঘটে গেলে এর দায় কি তারা এড়াতে পারবেন?’
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে টিকাপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল বারি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গত ৫, ১২ ও ১৯ নভেম্বর পর্যায়ক্রমে তিনটি চিরকুট প্রদান করা হয়েছে। এই চিরকুটগুলো টাকার মধ্যে মুড়ানো অবস্থায় দানবাক্সে পাওয়া গেছে। প্রতি জুম্মার নামাজের পর দানবাক্সের টাকা গণনার সময় এই চিরকুটগুলো পাওয়া গেছে। তবে গত শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) এ ধরনের আর কোনো চিরকুট আর পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, তিনটি চিরকুট কমিটির অর্থ সম্পাদক মো. আব্দুল মোমিনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এমন ঘটনায় বেশ আমরাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।
মসজিদ কমিটির কোষাধক্ষ আব্দুল মমিন জানান, চিরকুটগুলো পরপর তিনটি জুম্মার নামাজের পর টাকার মধ্যে পাওয়া গেছে। কারা এর পেছনে আছে তা জানা নেই। তবে মসজিদের অনেকেই আছেন যারা বর্তমান কমিটিকে পছন্দ করেন না। মসজিদে সিসি ক্যামেরা নেই। এছাড়া শত শত মানুষ আসে এ মসজিদে নামাজ পড়তে। সবমিলিয়ে বোঝা বড় দায়।
তিনি জানান, মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বার বার এ বিষয়ে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। তবুও তারা বিষয়টি হাল্কাভাবে নিয়েছেন। এমন ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়।
এ বিষয়ে কথা হয় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আইনাল হক পিটার বলেন, রাতে সভাপতি সাহেবের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আগামীকাল (১ ডিসেম্বর) মসজিদ কমিটির একটি জরুরি সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে সকলের সঙ্গে মতবিনিময় করে এ বিষয়ে একটি আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এটি হয়তো এলাকার কোনো ছোট ছেলেরা ফাইজলামি করে টাকার মধ্যে চিরকুট লিখে পাঠিয়েছে। কিন্তু পরপর তিনটি চিরকুট আসায় আমরা বিষয়টি সিরিয়সলি ভাবে দেখছি। এছাড়াও তিন-চার দিনের জন্য আমি রাজশাহীর বাইরে অবস্থান করায় এ বিষয়ে বসে আলাপ করা হয়নি। বুধবার (১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আশা করছি।’
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ঘটনায় কেউ কোনো প্রকার অভিযোগ দেয়নি। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিৎ ছিল।
সূত্র; গ্রামের কাগজ