মশা মারতে বিদেশ থেকে কার্য্কর ঔষধ আসছে ধৈর্য্ ধরুন- ওবায়দুল কাদের
অপরাজেয় বাংলা-মশা মারার কার্যকর ওষুধ আসছে জানিয়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, যেন অকার্যকর কোনো ওষুধ না আসে, সে জন্যই সতর্কতা।
শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিলি ও মশক নিধন অভিযানের’ দ্বিতীয় দিনে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।
এবার ডেঙ্গুর বিস্তারের পর গণমাধ্যমে খবর এসেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন যে ওষুধ ব্যবহার করে, সেটা মশা নিধনে কার্যকর নয়। আর বিতর্কের পর নতুন ওষুধ আনার অঙ্গীকার করা হয়েছে হাইকোর্টে। তবে এখনো সে ওষুধ আনা যায়নি।
এডিস মশা নিধনে কার্যকর ওষুধ কবে নাগাদ আসতে পারে- এমন প্রশ্নে সড়ক মন্ত্রী বলেন, ‘অন্য দেশের কোন অকার্যকর ঔষধ যাতে কোন কারণে চলে না আসে এর জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরমর্শ নেওয়া হচ্ছে। যাতে কার্যকর ওষুধ প্রয়োগ করা যায়। এর পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।’
‘এখানে কোনো প্রকার আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরমর্শ অনুযায়ী কার্যকর ঔষধ বাংলাদেশ আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, এ জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।”
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার কেবল কথা বলে যাচ্ছে না, কাজ করছে বলেও দাবি করেন কাদের। বলেছেন, অনেকে কেবল ‘লিপ সার্ভিস’ দিয়ে যাচ্ছে। এতে কেবল কথাই হচ্ছে, কাজের কাজ হচ্ছে না।
সারা দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীন দল গত তিন দিনের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পালন করছে। ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে দেশবাসীকে সতর্ক করতে নানা প্রচারপত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
কাদের বলেন, ‘যারা শুধু লিপ সার্ভিস দিয়ে বেড়াচ্ছেন তাদের কে বলব শুধু লিপ সার্ভিস না দিয়ে আসুন অ্যাকশান প্রোগ্রামে সমন্বিতভাবে এই ডেঙ্গু রোগ এবং এডিস মশা বংশ বিস্তার করতে না পারে এর জন্য কাজ করি।’
‘আমরা বসে নেই, আমরা শুধু লিপ সার্ভিস দিচ্ছি না। অনেকে পত্রপত্রিকায় লিপ সার্ভিস দিচ্ছে কিন্তু বাস্তবে কোনো কার্যকারিতা নেই। ডেঙ্গু প্রতিরোধেও কার্যকারিতা নেই, বন্যা কবলিতদের পাশেও ফটোসেশন ছাড়া কোনো কার্যকারিতা তাদের নেই।”
ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে বলে মনে করেন কি না- এমন প্রশ্নও ছিল আওয়ামী লীগ নেতার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘রোগটাকে কী নামে আপনি অবহিত করলেন সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হল ডেঙ্গু জ্বরে আজকের যে অবস্থা, এডিস মশার যে ভয়াবহ উপদ্রপ এবং তাণ্ডব সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এটা বাস্তব এবং এটা সত্য।’
‘এই বাস্তব সত্যটাকে অস্বীকার করা উপায় নেই। এই ভয়াবহতাকে কোন নামে অবহিত করতে হবে এ ধরনের কোনো বিষয় নেই। আমরা এই বিষয়টাকে কীভাবে নিলাম সেটা দেখার বিষয়। আমরা সিরিয়াসলি নিয়েছি।’
সংকটে সবাইকে এগিয়ে আশার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা মনে করি, এটি একটি মানবিক ক্রাইসিস। সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এগিয়ে আসা উচিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও এডিস মশার বংশ বিস্তার আজকে যে ভয়াবহ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে এর বিরুদ্ধে সর্বাত্বক অভিযান পরিচালনা করার জন্য।’
‘আসুন সবাই মিলে সম্মিলত লড়াই চালিয়ে যাই এই প্রাণঘাতি মশকের বিরুদ্ধে এবং ভয়াবহ প্রাণঘাতি ডেঙ্গু রোগের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।’
সিটি করপোরেশন এবং এলজিইডি মন্ত্রণালয় কীভাবে কাজ করবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘একদিকে সচেতনতা অন্যদিকে মশার বংশ বিস্তার যাতে করতে না পারে তার জন্য যা যা করার দরকার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রণায় দুই সিটির মেয়র আমাদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
‘স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন কে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুয়ায়ী সবাই সমন্নিত ভাবে কাজ করছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।