Type to search

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’র কেন্দ্রীয় কমিটিকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিলো যশোর জেলা কমিটি

ঝিকরগাছা

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’র কেন্দ্রীয় কমিটিকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিলো যশোর জেলা কমিটি

সদ্য দু’টি কমিটিতে যোগ করা হল ঝিকরগাছার বিতর্কিত গ্রাম্য হাতুড়ে চিকিৎসক কথিত ডাঃ বিল্লাল

আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা :

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দদের না জানিয়ে বা কেন্দ্রী কমিটিকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়ে যশোর জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন করেছে জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। উক্ত কমিটি দু’টোর মধ্যে রয়েছে যশোরের ঝিকরগাছার বিতর্কিত গ্রাম্য হাতুড়ে চিকিৎসক কথিত ডাঃ বিল্লাল হোসেন। সে উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের মৃত মোরশেদ আলী ও আমেনা খাতুনের ছেলে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের প্রদত্ত জাতীয় পরিচয়পত্রে মশিয়ার রহমান নামের একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০২২সালের নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছে মৃত মোরশেদ আলীর স্ত্রী আমেনা বেগম নামের একব্যক্তি। তার এমন অনৈতিক কাজের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তারই বড় সন্তান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের ঝিকরগাছা উপজেলা কমিটির সভাপতি পদ স্থগিত হওয়া, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নামধারী ও নিজ উপজেলায় ২৫০জনের টিউবওয়েলের অর্থ আত্মসাৎকারী এবং গ্রাম্য চিকিৎসক তথাকথিত ডাঃ বিল্লাল হোসেন। তাকে শুক্রবার (১০মার্চ) যশোর জেলার কমিটির আহবায়ক কাজী টিটো ও সদস্য সচিব শাফি সমুদ্র এর স্বাক্ষরিত দুটো কমিটিতে আবারও যশোর জেলার আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও ঝিকরগাছা উপজেলার পুর্নাঙ্গ (আংশিক) কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে দিয়েছেন। বিতর্কিত কথিত ডাঃ বিল্লাল হোসেনের অনৈতিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী, জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাচন অফিসকে জানিয়ে অভিযোগ দায়ের হওয়ার এবং উপজেলার ৬৩ জন মুক্তিযোদ্ধা লিখিত অভিযোগ বিষয়ে জেলা কমিটি সব জানার পরেও তাকে আবার দুটো কমিটিতে পদ দেওয়ার করণে উপজেলা সচেতন মহল ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক জেলা কমিটির এই অনৈতিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ঝিকরগাছার বিতর্কিত গ্রাম্য হাতুড়ে চিকিৎসক কথিত ডাঃ বিল্লাল হোসেনকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করতে দাবি জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন মহল ও বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার লিয়াকত আলী বলেন, বিল্লালের বিরুদ্ধে ৬৩ জন মুক্তিযোদ্ধা লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও তার মত এরকম বিতর্কিত একজন ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ যশোর জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব দেয়াটা অত্যান্ত দুঃখজনক। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
যশোর জেলা কমিটির সদস্য সচিব শাফি সমুদ্র বলেন, দস্যু এবং দরবেশ সবাইকে নিয়েই সংগঠন করতে হয়। দস্যুতা এবং দরবেশগিরি এগুলো তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কারো ব্যক্তিগত স্বভাবে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ হস্তক্ষেপ করে না। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল তাদের সনদ বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে অ-মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমরা বলতে পারিনা। তদন্ত চলতেই পারে, তদন্তের রায় যে কোনো পক্ষে বিপক্ষে যেতে পারে।
যশোর জেলা কমিটির আহবায়ক কাজী টিটো বলেন, বিল্লালকে এক মাসের মধ্যে তার স্বপক্ষে প্রমাণাদি পেশ করার শর্তে ঝিকরগাছা শাখার সভাপতি পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। কিছু কৌশলগত কারণে তাকে এই পদ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’র প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব শফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ যেটা করেছে সেটা আমার জানা নেই। আমি আমার চেয়ারম্যানের সাথে উক্ত বিষয়ের উপর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ সোলায়মান মিয়া বলেন, আমাদের সংগঠন একটি মানবিক সংগঠন। যারা অপকর্মের সাথে জড়িত তাদেরকে এখানে কোনে পদে রাখা হবেনা। যশোর জেলা কমিটি আমাকে না জানিয়ে আমার রেফারেন্স ব্যবহার করে বিল্লাল হোসেনকে যশোর জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য করেছে। যার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে তাকে পদ দেয়া ঠিক হয়নি। বিষয়টি আমি খোজ নিচ্ছি।