Type to search

পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন ???

যশোর

পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন ???

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স: বেনাপোল (যশোর) : ভারতীয় কৃষিপণ্য মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা ‘ন্যাপেড’ সোমবার থেকে হঠাৎ করে পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে ৭৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করায় তার প্রভাব পড়েছে বেনাপোল বন্দরে।
আগে প্রতি মেট্রিক টন ৩৫০ মার্কিন ডলারে রপ্তানি করলেও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সোমবার থেকে প্রতি টন পেঁয়াজ ৭৫০ মার্কিন ডলারে ব্যবসায়ীদের আমদানি করতে হবে। যদি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়, তাহলে আগের এলসিগুলো আবার মূল্য বাড়িয়ে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে পেট্রাপোল বন্দরে আটকে আছে দেড় শতাধিক পেঁয়াজের ট্রাক ও ৪২টি ওয়াগানযুক্ত তিনটি ট্রেন।
সোমবার সকালের দিকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ঢুকেছিল। এর পরপরই দেশের সবগুলো বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের সংগঠন। ভারতের স্থানীয় বাজারে সঙ্কট থাকায় বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ করতে পেঁয়াজ আমদানিতে মূল্য দ্বিগুণ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। বাংলদেশি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতিবারই ভারত এমন কাজ করে থাকে। শুধু পেঁয়াজ না, প্রতিটি খাদ্যদ্রব্যে এ কাজটি করে সেদেশের সরকার।
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ার পরই দেশি বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। সোমবার যে ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল মঙ্গলবার সকাল থেকে তা ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। দেশে যথেষ্ট মজুদ থাকা সত্ত্বেও শুধু ভারত রপ্তানি বন্ধ করেছে- এই খবরেই পেঁয়াজের বাজার চড়ছে বলছেন ক্রেতারা।
বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘মা সরস্বতী এজেন্সি’র স্বত্বাধিকারী বাপ্পা মজুমদার বলছেন, বন্যার কারণে ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। বাজারে পেঁয়াজের মূল্য সহনশীল রাখতে ভারত সরকারের কৃষিপণ্য মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা ‘ন্যাপেড’ রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে।
বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রয়েল এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করতেই কৌশল হিসেবে রফতানি মূল্য দ্বিগুণ করেছে। এমন চলতে থাকলে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকবে। তবে সেদেশের সরকার যদি তাদের সিদ্ধান্ত বদল করে তবে বাজারমূল্য আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে। দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন এলসিতে পেঁয়াজ আমদানি করে ব্যবসায়ীরা লাভ করতে পারবেন না বলে মনে করেন তিনি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভারতে মূল্য বৃদ্ধির কারণে আজ দুদিন ভারত থেকে কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। বাংলাদেশি অনেক আমদানিকারকের এলসি ভারতের রপ্তানিকারকদের কাছে পড়ে আছে। তারা বাড়তি মূল্য সংযোজন করে পেঁয়াজ আমদানি করবেন কিনা সেটা বলা যাচ্ছে না।

বাজার নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত
এদিকে পেঁয়াজের মূল্য বেশি নেওয়ায় বেনাপোলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তিনজন আড়ত ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। মঙ্গলবার সকালে শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বেনাপোল কাঁচাবাজার এলাকায় এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
বাজারের মিম বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক শুকুর আলীকে দশ হাজার, মেহেরাব স্টোরের মালিক সুরুজ মিয়াকে ১৫ হাজার ও সবুর বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক সবুর খানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে আদায় করেন আদালত। ওই সময় বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ, বাজার কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসনা শারমিন মিথি জানান, ভারত রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করায় বেনাপোল বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি করছে- এমন খবরে বাজার পরিদর্শনে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। এই অপরাধে দোকানদারদের অর্থদণ্ড করাসহ কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। শার্শা উপজেলার সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পৌর স্যানিটারি ইনসপেক্টরকে (পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে) বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিথি।

সূত্র: সুবর্ণভূমি

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *