Type to search

‘পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় ধ্বংস হচ্ছে ইউরোপের জনজীবন’

আন্তর্জাতিক

‘পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় ধ্বংস হচ্ছে ইউরোপের জনজীবন’

ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে মস্কোর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, এটা (নিষেধাজ্ঞা) এমন অসুখ, যা সমগ্র বিশ্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সবচেয়ে পূর্বের শহর ভ্লাদিভস্তকে মস্কোভিত্তিক ইস্টার্ন ইকনোমিক ফোরামের (ইইএফ) সম্মেলন চলছে। এ সম্মেলনে অংশ নিয়ে পুতিন বলেন, পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক আগ্রাসন মোকাবিলা করছে রাশিয়া।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপীয়দের জীবনযাত্রার মান বলি দেওয়া হচ্ছে। আর দরিদ্র দেশগুলো খাদ্যের  যোগান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। প্রথমে রাজধানী কিয়েভে হামলা করলেও পরে পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলে মনোনিবেশ করে মস্কো। অন্তত পাঁচটি শহর দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। ছয় মাস ধরে ওই অঞ্চল ঘিরে অচলাবস্থা চলছে।

গত আগস্টে পুতিনের নিশ্চয়তা দেওয়ার আগে কৃষ্ণসাগরের উপকূলবর্তী ইউক্রেনের বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে মস্কো। সমঝোতার পর এ পর্যন্ত মাত্র দুইটি শস্যবাহী জাহাজ আফ্রিকায় গেছে।

ইউক্রেনে হামলার কারণে রুশ ব্যাংক, ব্যবসায়ী ও ক্রেমলিনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সম্পদের ওপর রেকর্ড নিষেধাজ্ঞা দেয় পশ্চিমা দেশগুলো। আর রাশিয়ার জ্বালানি আমদানি হ্রাসের পরিকল্পনা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

এর জেরে প্রযুক্তিগত সমস্যার কথা জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে মস্কো। মূলত নর্ড স্ট্রিম-১ নামের ওই গ্যাসলাইন দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস জার্মানি হয়ে ইউরোপে যায়। এতে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বেড়েছে। ইউরোপের দেশগুলোতে গ্যাস ও তেলের সংকট দেখা যায়। জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে।

এ সংকট সমাধানে শুক্রবার বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের মন্ত্রীরা। এ ছাড়া আরেকটি সভায় রাশিয়ার জ্বালানির মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই প্রস্তাবকে বোকামীপূর্ণ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন পুতিন।

পুতিন বলেন, পশ্চিমারা অন্য দেশের ওপর নিজেদের নীতি চাপিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা গুটিয়ে রাশিয়া ছেড়েছে; কিন্তু আমরা এখন দেখছি কীভাবে ইউরোপে একের পর এক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে।

শুধু পশ্চিমারা নয়, রাশিয়ার ওপরও এর খারাপ প্রভাব পড়ছে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে।

পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের লক্ষ্য করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, চোখের সামনে ডলার, ইউরো, পাউন্ডের ওপর থেকে মানুষের আস্থা হারাচ্ছে। আর রাশিয়া তার সার্বভৌমত্বকে শক্তিশালী করে যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আমরা কিছুই হারাইনি এবং কিছুই হারাবো না।’

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, ‘রাশিয়া জ্বালানি সম্পদকে কাজে লাগিয়ে ইউরোপকে ব্ল্যাকমেইল করতে চায়। পুতিন ইউরোপের জনজীবন বিপর্যস্ত এবং স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চান।’