নড়াইলে একতলা দালান ঘর ভেঙ্গে বাড়ি ও জায়গা দখলের অভিযোগ
নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল শহরের ধোপাখোলা এলাকায় আব্দুল মান্নান নামে এক ব্যক্তির বসতবাড়ি ভেঙ্গে ফেলা এবং তারসহ ১৫শতক জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় মোহাম্মদ উল্লাহর ও বাবু শেখের নেতৃত্বে তার লোকজন গত ৭ নভেম্বর এবং ১৬ ডিসেম্বর দু’দফা বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে একতলা পাকা দালান ঘর, রান্নাঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কেউ বাড়িতে ছিলেন না। বাড়ির মালিক আব্দুল মান্নান অসুস্থ থাকায় তারা সপরিবারে ঢাকায় ছিলেন। সম্প্রতি এ ঘটনায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল এবং নড়াইল সদর থানায় দায়ের হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ আব্দুল মান্নানের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, ২০০৮ সালে নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর মৌজার ধোপাখোলায় ৭৭৩ নম্বর এস এ খতিয়ানের ১১৫৭ ও ১১৫৯ দাগের ১৫ শতক জমি কিনে নামপত্তন ও নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছি। ওই জমিতে একতলা পাকা দালান ঘর করে বসবাস করছি। ঘটনার সময় আমার স্বামী বাড়ির মালিক আব্দুল মান্নান অসুস্থ থাকায় সপরিবারে দেড় মাস ঢাকায় ছিলাম। এ সুযোগে মোহাম্মদ উল্লাহ ও বাবু শেখ নামে দু’্যক্তি ও তাদেও লোকজন বাড়ি ভেঙ্গে ফেলেছে এবং আমাদের বাড়ির ১৫ শতক জমি রেকর্ড করে নিয়েছে। এখন মাথাগোঁজার ঠাঁইও হারিয়ে ফেলেছি। তারা বাড়ির ৪টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর ও একটি গোয়াল ঘর ভেঙ্গে আমার প্রায় ৬লাখ টাকার মালামাল, জানালা ও দরজা লুট করে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জমির পূর্বের মালিক গোলাম রসুল মোল্যা (৬০) বলেন, আব্দুল মান্নানের কাছে আমি জমি বিক্রি করেছি। এখন শুনছি জালিয়াতি করে মোহাম্মদ উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি রেকর্ড করে নিয়েছে। আমি তাকে চিনিও না।
ধোপাখোলা এলাকার নাছিমার প্রতিবেশী কানাই দাস, দুলাল বিশ্বাস, ভরত বিশ্বাসসহ এলাকাবাসী বলেন, রসুল মোল্যার কাছ থেকে আব্দুল মান্নান জমি কিনেছেন। হঠাৎ করে মোহাম্মদ উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি এ জমির মালিকানা দাবি করছে। তাদের একতলা পাকা দালান ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে। আমরা দালান ঘর ভাঙতে দেখে প্রথমে ভেবেছি, আব্দুল মান্নান মনে হয় জায়গা-জমি বিক্রি করে দিয়েছে। পরে জানতে পারি, জালিয়াতি চক্র দখল করেছে। আমাদের দাবি, প্রকৃত জমির মালিক আব্দুল মান্নানকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হোক।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ২০০৭ সালে আমি সন্তোষ কুমার দে এর কাছ থেকে এই জায়গা ক্রয় করি। এ জায়গা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছিল। এখন এ জায়গা আমার নামে রায় হয়েছে। গত ২ মাস আগে ওই ১৫ শতক জমি সদরের রতডাঙ্গা এলাকার বাবু শেখ নামে এক ব্যক্তির কাছে করে দিয়েছি। তারা দখল বুঝে নেয়ার জন্য বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এখানে কোনো মালামাল লুটপট করা হয়নি।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এটা বিরোধপূর্ণ জমি। দু’পক্ষকে আগামি শনিবার থানায় ডেকেছি। তাদের কাগজপত্র দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া যারা বাড়ি ভেঙ্গেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।