Type to search

ক্ষমতা পেয়েই নড়াইলের বিছালী ইউপি চেয়ারম্যানের ভূমি অফিস স্থানান্তর করার চেষ্টা ; ফুঁসে উঠছে জনসাধারণ

নড়াইল

ক্ষমতা পেয়েই নড়াইলের বিছালী ইউপি চেয়ারম্যানের ভূমি অফিস স্থানান্তর করার চেষ্টা ; ফুঁসে উঠছে জনসাধারণ

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি :
নড়াইলের বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিস মির্জাপুর থেকে স্থানান্তরে নানা ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুটি কয়েক পত্রিকা সহ মিডিয়ায় ” বিছালী ইউনিয়নে ৩৫ হাজার মানুষের দূর্ভোগ চরমে- খাজনা দিতেই ত্রিশ কিলোমিটার” শীর্ষক শিরোনামে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। যা মিথ্যা তথ্য নির্ভর এবং উদ্দেশ্য প্রণোদীতও বটে। যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে মির্জাপুর-আড়পাড়ার আপমর জনসাধারণ। সাম্প্রতি বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিস স্থানান্তর নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি ও নগ্ন হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। নড়াইল জেলার সদর থানার অন্তর্গত ১২ নং বিছালী ইউনিয়নের ভূমি অফিস মির্জাপুরে অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরে এ অফিস সুনামের সাথে সেবা প্রদান করে আসছে। ভবনের জরাজীর্ন অবস্থা এবং মালিকানাধীন জমির জটিলতার কারণে ভূমি অফিসটি মির্জাপুরে অবস্থিত কুঠির ভীটা নামক স্থানে (মৌজা-১৮৯ নং, আড়পাড়া-মির্জাপুর, খতিয়ান নং- ০১, দাগ নং-৫৩৩৩, জমির পরিমাণ ২৯ শতক) এ স্থানান্তরিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানে বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের নির্ধারিত স্থান নামে একটি সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তার ভাষ্যমতে- সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নতুন ভবন নির্মানের স্থান নির্ধারণ করে সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। বিছালী ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আরো জানান, আড়পাড়া-মির্জাপুর মৌজা বিছালী ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় মৌজা। সমগ্র ইউনিয়নে যদি ১২ হাজার খাজনা প্রদানকারী থাকে তার মধ্যে আড়পাড়া ও মির্জাপুরে ৫ হাজারেরও উর্ধ্বে খাজনা দাতা রয়েছে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে ইতিপূর্বে বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিস স্থাপনকল্পে মির্জাপুর গ্রামকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বেছে নিয়েছিলেন। আড়পাড়া ও মির্জাপুরবাসীর অভিযোগ, নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান ফারুক হুসাইন হেমায়েত এখানে যেন কোনভাবেই ভূমি অফিস না থাকে সে ব্যাপারে তিনি অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তার এ অপচেষ্টাকে আড়পাড়া ও মির্জাপুরবাসী নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছে। বিছালী ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান হেমায়েত হুসাইন ফারুক নিজে ভুমি অফিসটি মধ্যবর্তী স্থানে স্থাপনের অযুহাত দেখিয়ে তার নিজ এলাকায় বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি নিয়ে যাওয়ার জন্য মাননীয় জেলা প্রশাসক নড়াইল বরাবরে একটি আবেদন করেছেন (তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়েছে) বলে সূত্রে জানা গেছে। উক্ত আবেদনের সুত্র ধরে কয়েকটি পত্রিকায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। শপথ গ্রহণের পূর্বেই এমন কর্মকান্ডকে পক্ষপাতমূলক আচরণ ও ষড়যন্ত্র মূলক নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছেন মির্জাপুর আড়পাড়া মৌজার হাজার হাজার খাজনাদাতা সহ আপমর জনসাধারন।
তাদের কথা তিনি শুধুমাত্র মধুরগাতীর চেয়ারম্যান নন তিনি মির্জাপুর আড়পাড়া সহ বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বটে। আড়পাড়া-মির্জাপুর গ্রাম দুটিতে ৬ হাজারের বেশি ভোটারের বসবাস। জনসংখ্যাও বাকি গ্রামগুলোর প্রায় সমতুল্য। তাই এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে সমাধানের জন্য চেষ্টা প্রয়োজন ছিলো। এ ব্যাপারে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান-এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে ভূমি অফিস নেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি। ইউনিয়নের বৃহৎ অংশের খাজনাদাতারা বলেন, পার্শ্ববর্তী সিংগা শোলপুর ইউনিয়নের বড় মৌজা গোবরা মৌজা। গোবরা গ্রামে ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি স্থাপন করা হয়েছে। আগদিয়া ও অনুরুপ উদাহরণ। গোবরা, সিংগা শোলপুর, বড়গাতী, খড়রিয়া, তারাপুর, ছোনখুলা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের জমি থাকায় তারাও মির্জাপুরস্থ বিছালী ইউনিয়ন ভুমি অফিসে খাজনা দিতে আসেন। বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি মির্জাপুরে স্থাপনকাল থেকে দালাল মুক্ত থেকে সুনামের সাথে প্রায় ৩ যুগ ধরে সেবা প্রদান করে আসছে। মির্জাপুর গ্রাম একটি ঐতিহ্যবাসী গ্রাম যেখানে জন্মগ্রহন করেছেন অবিভক্ত বাংলার স্পিকার সৈয়দ নওসের আলী, বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতার একজন খন্দকার আব্দুল হাফিজ, অবিভক্ত বাংলার সংসদ সদস্য, সাবেক বৃহত্তর যশোর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুন্সি ওয়ালিউর রহমান এবং বিছালী ইউনিয়নের রূপকার খন্দকার আবুল কাসেম তারেক বিল্লাহ প্রমুখ খ্যাত নামা ব্যক্তিবর্গ। তাই মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় নড়াইল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড মহোদয়ের নিকট জোর দাবি তাদের সিদ্ধান্ত অটুট রেখে বিছালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি মির্জাপুর গ্রামে অবস্থিত কুঠির ভীটা নামক স্থানে যেন স্থাপিত হয় এটাই আড়পাড়া-মির্জাপুরবাসীর আপমর জনসাধারণের প্রাণের দাবী। এছাড়া দাবী বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসক বরাবরে গণস্বাক্ষর স্মারকলিপি, বিক্ষোভ সহ এলাকায় মানববন্ধনের কথাও বলেন আপমর জন সাধারন।