নিজস্ব ধরন আর নিবিড় সাধনার মধ্য দিয়েই এস এম সুলতান জয় করেছেন শিল্পের দুনিয়া। বাংলাদেশের মানুষ আর প্রকৃতিকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব দরবারে। এই মানুষটির ঠিকানা ছিল চিত্রা নদীর পাড়ের ছোট্ট কুটির।
সুলতানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে যেখানে নানা অনুষ্ঠানে মুখরিত থাকত সুলতান মঞ্চ সেখানে এবারও থাকছে না কোনও আয়োজন। ভিড় নেই শিল্প অনুরাগী ও দর্শনার্থীদের। করোনা মহামারি ম্লান করে দিয়েছে আনন্দ। তবে, সীমিত পরিসরে পালন করা হচ্ছে বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পীর জন্মবার্ষিকী।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিল্পীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মাজার জিয়ারত, কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল এবং সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের এই দিনে নড়াইলের চিত্রা নদীর পাড়ের নিভৃত পল্লি মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৭০ বছরের জীবনে চিত্রশিল্পী সুলতান তার তুলির আঁচড়ে দেশ, মাটি, মাটির গন্ধ আর ঘামে ভেজা মেহনতি মানুষের সঙ্গে নিজেকে একাকার করে সৃষ্টি করেন বিশ্ববিখ্যাত সব ছবি।
জীবদ্দশায় সুলতান জাতির জন্য কুড়িয়েছেন অনেক সম্মান। অথচ মৃত্যুর পর তার অনেক স্বপ্নেরই বাস্তবায়ন হয়নি। তবে, শিল্পী সুলতানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নানা উদ্যোগের কথা জানান জেলা প্রশাসক।
১৯৫০ সালে ইউরোপ সফরের সময় যৌথ প্রদর্শনীতে তার ছবি সমকালীন বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, ডুফি, সালভেদর দালি, পল ক্লি, কনেট, মাতিসের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়।
এসএম সুলতান ১৯৮২ সালে ‘একুশে পদক’, ১৯৮৪ সালে ‘রেসিডেন্ট আর্টিস্ট’ ১৯৮৬ সালে ‘বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা’ এবং ১৯৯৩ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ ভুষিত হন। এছাড়াও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’সহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর মারা যান বরেণ্য চিত্র শিল্পী এস এম সুলতান।সূত্র,ডিবিসি নিউজ