Type to search

কেশবপুরের ১১জন মেধাবীর ৩৮তম বিসিএস এর ক্যাডার হওয়ার গৌরব অর্জন  

যশোর

কেশবপুরের ১১জন মেধাবীর ৩৮তম বিসিএস এর ক্যাডার হওয়ার গৌরব অর্জন  

 

জাহিদ আবেদীন বাবু, কেশবপুর (যশোর) থেকে।

যশোরের কেশবপুর উপজেলার ১১জন মেধাবী ৩৮তম বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন । পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ১১ জন প্রশাসন, বন, ট্যাক্সেসান, পুলিশ, কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করেছে । বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তদের অধিকাংশই পল্লীর সাধারণ ও কৃষি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও অধ্যাবসায় এর ফলে তাহারা এ সাফল্য  অর্জন করেছেন। এদিকে বিসিএস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ১১ মেধাবীকে রোববার দুপুরে কেশবপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এ ছাড়া রোববার সকালে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূসরাত জাহান নিজ কার্যালয়ে বিসিএস ক্যাডারে  সুপারিশপ্রাপ্ত ১১ মেধাবীর সাথে সৌজন্য সভা করেছেন।

জানা গেছে, ৩৮তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার চুড়ান্ত ফলাফলে সারা দেশের ২ হাজার ২শ’ ৪ জনকে চাকরীতে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এরমধ্যে কেশবপুর উপজেলারই রয়েছেন ১১জন । এ উপজেলা থেকে এক সাথে এতজন বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সাফল্য  অর্জনকারীরা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসাচ্ছেন।

জানা গেছে, প্রশাসন ক্যাডারে সহকারী কমিশনার পদে সুপারিশকৃত শারমিন আক্তার রিমা কেশবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী ও কেশবপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল লতিফের মেয়ে। মা নাসিমা বেগম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসী বিষয়ে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষে মেধাবী রিমার বিয়ে হয় ৩৩তম বিসিএসের ডাক্তার নাহিদুল হকের সাথে। ফরেস্ট (বন) ক্যাডারে সহকারী বন সংরক্ষক পদে সুপারিশকৃত শামীম রেজা উপজেলা পাড়ার বাসিন্দা বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক মুনছুর রহমানের ছেলে। মেধাবী শামীম রেজা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সয়েল ওয়াটার এন্ড ইনভারমেন্ট বিষয়ে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষে খুলনার হরিনটানা থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত আছেন।ট্যাক্সেসান (কর) ক্যাডারে সহকারী কমিশনার পদে সুপারিশকৃত মঞ্জুরুল আলম রাসেলের বাড়ি উপজেলার গৌরীঘোনা ইউনিয়নের ভেরচী গ্রামে। কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবসরপ্রাপ্ত ইপিআই টেকনিশিয়ান আব্দুল জব্বারের একমাত্র ছেলে রাসেল। মা মমতাজ বেগম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং কেশবপুর ডিগ্রী কলেজ এলাকায় তাদের দীর্ঘদিনের বসবাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইন্সটিটিউট থেকে ফুটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া শেষে রাসেল বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (বিআরইবি) সহকারী পরিচালক পদে কর্মরত। একই ইউনিয়নের গৌরীঘোনা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হরিপদ কুন্ডুর ছেলে মিঠুন কুমার কুন্ডু পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে সুপারিশকৃত। অত্যন্ত মেধাবী মিঠুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষ করে সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে ফেনীতে কর্মরত আছেন ।  কৃষি ক্যাডারে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পদে সুপারিশপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কোমরপোল গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে। মেধাবী আসাদুজ্জামান ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি বিষয়ে সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তির্ণ হয়েছে। স্বাস্থ্য কৃষি ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে সুপারিশপ্রাপ্ত ডা. তুহিন পারভেজ জুয়েল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাশ ও ইন্টার্ণী করেছেন। কেশবপুরের সদর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক আসমত আলী মোল্যার ছেলে ডা. তুহিন পারভেজ বর্তমান ঢাকায় কর্মরত আছেন। উপজেলার ভোগতী গ্রামের  মৃত গৌরঙ্গ সাহার মেয়ে অত্যন্ত মেধাবী টুম্পা সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিষয়ে সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তির্ন হয়েছে । উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুন মূলগ্রামের কৃষক ও কাপড় ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষ করে শরিয়তপুর একটি হাইস্কুলে শিক্ষাকতা করেন। সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের কৃষক ও কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান সরদারের ছেলে রোকনুজ্জামান রোকন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয়। উপজেলার বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের বাউশলা গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষে কেশবপুরের গোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত। উপজেলার পাাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের কৃষক বজলুর রহমান গাজীর ছেলে বুলবুল আহমেদ রিয়াদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উর্ত্তীন হয়েছে।

এ দিকে বিসিএস পরীক্ষার চুড়ান্ত ফলাফলে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কেশবপুরের ১১মেধাবী ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন। বিসিএস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কেশবপুরের ১১ মেধাবীকে রোববার দুপুরে কেশবপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।