Type to search

কেউ আসুক না আসুক নির্বাচন কমিশন গঠন থেমে থাকবে না

বাংলাদেশ

কেউ আসুক না আসুক নির্বাচন কমিশন গঠন থেমে থাকবে না

নেতিবাচক রাজনীতি থেকে সরে এসে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মন্ত্রী বলেন, কেউ সংলাপে আসুক বা না আসুক নির্বাচন কমিশন গঠন থেমে থাকবে না।

ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলে

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাসহ পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর আগে আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সার্চ কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য দুইজন, চারজন নির্বাচন কমিশনারের জন্য আটজনের নাম সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করবেন। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ জনের নামের তালিকা থেকে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার চূড়ান্ত করবেন।

ইসি গঠনের জন্য গত ২০ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন আবদুল হামিদ। সংলাপের প্রথম দিন সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বিএনপি যাবে না বলে শুরুর দিকে বিএনপির নেতারা এমনটা জানালেও পরে সেই সুর বদল হয়। কয়েকদিন আগে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছিলেন রাষ্ট্রপতির চিঠি এখনো পায়নি বিএনপি। আমন্ত্রণ পেলে নির্বাচন ইস্যু নিয়ে সংলাপে বসবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বুধবার ওবায়দুল কাদের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নেতিবাচক রাজনীতি থেকে সরে এসে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি এগিয়ে আসবে।

রাষ্ট্রপতির সংলাপ অর্থহীন এবং এই সংলাপে নাকি সংকটের সমাধান হবে না বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এর আগেও নির্বাচন কমিশন গঠনে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে এবারও সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

গতবারও বিএনপি’র তালিকা থেকে একজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়ে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা যাবে না, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হবে বিএনপি কি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন চায়, নাকি বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়।

সরকার নাকি দেশকে অগণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকৃতপক্ষে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার নিরলস প্রয়াসে বিএনপিই পদে পদে বাধা সৃষ্টি করছে।

বিএনপির বহুদলীয় তামাশা আর ভোটারবিহীন নির্বাচনই দেশকে গণতন্ত্র থেকে ছিটকে দিয়েছিলো বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করে বিএনপিই গণতন্ত্রের কবর রচনা করতে চেয়েছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আপাদমস্তক অগণতান্ত্রিক এবং লুটপাটের রাজনীতির জনক বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের বুলি ছাড়লেও অন্তরে সাম্প্রদায়িকতা আর সুবিধাবাদ লালন করে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপিই এদেশকে ধর্মান্ধ, উগ্রবাদী ও সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলো। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে বিশ্ব-দরবারে সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে বলে বিএনপি নেতারা যে অভিযোগ করছে সে ব্যাপারেও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বলেন সরকার নয়, মিথ্যাচার আর বিএনপি এখন সমার্থক শব্দ।

বিএনপি নেতাদের অবিরাম মিথ্যাচারের দাপটে এখন আর তাদের বক্তব্যে সত্যের লেশমাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না এমন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন বেগম জিয়ার মামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তারা মিথ্যাচার আর অপরাজনীতির ওপরই ভরসা করে চলেছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বন্দি বেগম জিয়া অধিকতর শক্তিশালী- এ দর্শন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তারা মুক্তির চেষ্টাও করেনি, আইনগত লড়াইও তেমনটা করেনি, তাদের উদ্দেশ্যমূলক অপরাজনীতির দাবার গুটি হয়েছেন বেগম জিয়া।

বিএনপি নেতারা বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়েও অতিরাজনীতি করছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা চিকিৎসার চেয়ে রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলকেই অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছে, বরং শেখ হাসিনাই বেগম জিয়ার প্রতি উদারতা এবং মানবিকতার নজির স্থাপন করেছেন। অথচ সেই কৃতজ্ঞতাবোধও বিএনপিতে নেই।

জনগণের সম্পদ লুন্ঠনের টাকায় চলছে বিএনপি নেতাদের বিলাসী জীবন এমন মনে করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, তাদের মুখে জনগণের কথা লোকদেখানো বাক্য ছাড়া আর কিছু নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা এখন সাইডলাইনে, যার বা যাদের নির্দেশে দল চলছে তারা মাঠের বাস্তবতা বুঝে না,জনগণের সাথেও সম্পৃক্ততা নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যেনতেন উপায়ে ক্ষমতা দখল এবং লুটপাটে লেগে যাওয়াই এখন বিএনপির একমাত্র টার্গেট।