কন্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর আর নেই , রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর শোক
অপরাজেয় বাংলা ডেক্স: বাংলাদেশের প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর আর নেই। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় বড় বোনের বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
নন্দিত এই গায়কের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শোক জানিয়েছেন। এ ছাড়া এই শিল্পীর মৃত্যুতে দেশের সংগীত অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এন্ড্রু কিশোরের বোনজামাই ডা. প্যাট্টিক বিপুল বিশ্বাস বলেন, ‘বর্তমানে শিল্পীর মরদেহ রাজশাহীর একটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। আগামীকাল সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে তার মায়ের পাশে সমাহিত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৃত্যুর আগে এন্ড্রু কিশোর নিজেই বলে গেছেন তাকে যেন মায়ের পাশেই সমাহিত করা হয়। সেই ইচ্ছায়ই মায়ের পাশেই তাকে সমাহিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে সময় এখনো ঠিক করা হয়নি।’
সিঙ্গাপুরে ৯ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ১৩ মিনিটে রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছিলেন এই বরেণ্য শিল্পী।
[৩] গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। সেখানে গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। টানা ৯ মাস চিকিৎসাধীন থেকে গত ১১ জুন একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর থেকে রাজশাহীতেই বসবাস করছিলেন।
[৪] এন্ড্রু ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামে পরিচিত। তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় রোমান্টিক গান উপহার দিয়ে গেছেন। তার চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে। সেখানে তিনি ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানে কণ্ঠ দেন। এ জে মিন্টু পরিচালিত ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘প্রতিজ্ঞা’ চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গাওয়া গান প্রথম জনপ্রিয়তা লাভ করে।
[৫] তিনি ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যে খানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান, ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য গান গেয়েছেন। দেশ-বিদেশের সুনামের পাশাপাশি তিনি সম্মানও পেয়েছেন।
[৬] বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য তিনি ৮বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন।
[৭] এন্ড্রু কিশোরের জন্ম ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর, রাজশাহীতে। পারিবারিক আবহে ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীত চর্চা করেছেন। সঙ্গীতে প্রতিষ্ঠা লাভের লক্ষ্যে ১৯৭৬ সালে পাকাপাকিভাবে ঢাকা চলে আসেন। সুরসাধনা করতে গিয়ে অনেক ত্যাগতিতিক্ষার মধ্য দিয়ে এগিয়েছেন, অর্জন করেছেন সাফল্য ও তুমুল জনপ্রিয়তা।
[৮] শিল্পীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
[৯] শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব প্রমুখ।
সূত্র আমাদের সময়