Type to search

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করোনা মুক্ত হয়ে আবার কোভিড চিকিৎসায় নেমে পড়েছেন

অভয়নগর

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করোনা মুক্ত হয়ে আবার কোভিড চিকিৎসায় নেমে পড়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার:অভয়নগর থেকে: অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান রিজভী করোনা মুক্ত হয়ে আবার কোভিড/ ১৯ চিকিৎসায় নেমে পড়েছেন। গত ৮ জুন থেকে কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়ে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে তাঁর সহকর্মী আলমগীর হোসেনও করোনা পজিটিভ হন। দ্বিতীয় দফা নমুনা পরীক্ষায় গত ২৩ জুন তাঁদের দুজনের প্রতিবেদন নেগেটিভ এসেছে।

তিনি আইসোলেশনে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে ও সন্দেভাজন করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করতে যেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

তিনি যশোর কোভিডের সম্মুখযোদ্ধা।
বাড়ি বাড়ি ঘুরে সন্দেভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে থাকা রোগীর চিকিৎসাসেবা, তাঁদের মানসিক সাহস জোগানো, বাড়িতে আইসোলেশনে থাকা রোগীদের টেলিমেডিসিন সেবা, করোনাজয়ী রোগীদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়াসহ নানা কাজ করে মানবিক চিকিৎসক হিসেবে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ শুরু হয় গত ২ এপ্রিল থেকে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৭৫ জন করোনা ‘পজিটিভ’ পাওয়া গেছে। সুস্থ হয়েছেন ৯৪ জন আর মারা গেছেন চারজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট(ল্যাব) আলমগীর হোসেনকে(৩৩) সঙ্গে নিয়ে মাহমুদুর রহমান রিজভী প্রথম দিন থেকেই করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন। গতকাল শনিবার পর্যন্ত তিনি একাই ৪৪০ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। করোনাভাইরাসের এই আতংকের মধ্যেও মানুষের একেবারে কাছে গিয়ে সেবা দিয়েই চলেছেন তিনি।
কথা হয় এই করোনাযোদ্ধার সঙ্গে। জানালেন, করোনার বিরুদ্ধে এ লড়াইয়ে জিততেই হবে। এজন্য আমাদের দরকার যুদ্ধ জয়ের মতো দৃঢ় মনোবল।
মাহমুদুর রহমান রিজভীর স্ত্রী চিকিৎসক। তাঁদের পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে। তিনি বললেন, প্রায় দেড় মাস ধরে ছেলের কাছ থেকে দূরে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকছেন। ছেলের জন্য তাঁর মনটা খারাপ হয়। মাঝেমধ্যে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তবে মহামারির এই সময়ে মানুষের কথা চিন্তা করে নিজেকে সামলে নিচ্ছেন।
তিনি বলছিলেন, করোনার কাছে পৃথিবীর সবকিছুই তুচ্ছ, ক্ষুদ্র, অতি নগন্য। করোনা শুধু জীবন কেড়েই নেয়নি, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়নি, বিচ্ছিন্ন করেছে সময়। এ কাজ নিজের ও পরিবারের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে মানবসেবা করতে পারছি। এ এক অন্যরকম অনভূতি।

যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, যশোর জেলায় করোনা মোকাবেলায় প্রথম থেকে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কিছু মানুষ এগিয়ে আসেন মাহমুদুর রহমান রিজভী তাঁদের মধ্যে একজন। শুরুর দিকে সন্দেভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহে অনেকে ভয় পেয়েছেন। কিন্তু ভয়কে উপেক্ষা করে তিনি নমুনা সংগ্রহ করেই চলেছেন। পাশাপাশি করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এক পর্যায়ে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনামুক্ত হয়ে তিনি নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করেছেন।