Type to search

অভয়নগরে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে

অভয়নগর

অভয়নগরে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে

মিঠুন দত্ত :সরকারি নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে নওয়াপাড়া সরকারি কলেজ সহ অভয়নগরে অনেক প্রতিষ্ঠান একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে। শিক্ষা বোর্ডের জারিকৃত ভর্তির প্রজ্ঞাপনে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকায় ১০০০ টাকার বেশি হবে না বলে উল্লেখ থাকলেও-শিক্ষা বোর্ডের এ নির্দেশনা মানছে না তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের আর্থিক অস্বচ্ছলতা বিবেচনা করে দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে উল্লেখিত ফি-যতদুর সম্ভব মওকুফ করতে নির্দেশনায় উল্লেখ আছে। এ বিষয়ে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর আগেই ভর্তি ফি সহ মাসিক বেতন ও যাবতীয় খরচের বিষয়ে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কলেজে ভর্তির নির্দেশনা দিয়েছে। সে মোতাবেক শিক্ষা বোর্ডের জারি করা ভর্তির প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে, সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকায় ১ হাজার টাকার বেশি হবে না। নির্দেশনায় মফস্বল বা পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সেশন ফিসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে ১ হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় ২ হাজার টাকা এবং ঢাকা মহানগর ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না।
মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিও ভূক্ত বা এমপিও বহির্ভূত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন ও এমপিও বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময়ে ভর্তি ফি, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ হাজার টাকা এবং ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ হাজার টাকা নিতে পারবে। তবে উন্নয়ন খাতে কোন প্রতিষ্ঠান এবার ১ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে রেড ক্রিসেন্ট ফি বাবদ ১২ টাকা নিতে পারবে। কোনো শিক্ষার্থীর পাঠ বিরতি থাকলে ও বিলম্বে ভর্তি হলে তাকে ১৫০ টাকা পাঠ বিলম্ব ফি প্রদান করতে হবে। কিন্তু শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা ও নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত ভর্তি ফি গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে নওয়াপাড়া সরকারী কলেজ সহ বেশ কয়েকটি কলেজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, উপজেলা অবস্থিত নওয়াপাড়া সরকারি কলেজে চলতি বছর প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনলাইন প্রসেসিং ফি, ভর্তি ফি, ভর্তি ফর্ম বাবদ একাদশ শ্রেণির ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী প্রতি মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষায় ২হাজার ৩’শ, বিজ্ঞান শাখায় ২হাজার৪’শ ও বিএম শাখায় ২ হাজার ১’শ ৪০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। গরীব, অসহায়, মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির ক্ষেত্রেও কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হচ্ছে না। কলেজ কর্তৃপক্ষের ধার্য্য টাকার স্থলে কম দিলে ওই শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছে না । তারা আরো বলেন, পার্শবর্তী মহিলা সরকারী কলেজে সর্বমোট ভর্তি নেয়া হচ্ছে ১ হাজার৫০ টাকা, পায়রা সরকারী কলেজে নেয়া হচ্ছে ১৫’শ টাকা,মডেল কলেজে ২হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কি কারণে এক এক কলেজ এক এক রকম ভর্তি ফি নিচ্ছে তা আমরা জানিনা।
নওয়াপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ মো: রবিউল হাসান বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্বান্ত মোতাবেক নিয়মনীতির মাধ্যমেই ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া বোর্ডের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভর্তির টাকা নেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত কোনো টাকা আদায় করা হচ্ছে না । পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজ’র অধ্যক্ষ সেলিম ইকবাল জানান, আমরা সরকার নির্ধারিত ফি নিচ্ছি। আর কলেজের আইডি কার্ড, একাডেমিক ক্যালেন্ডার বাবদ ৫’শ টাকা নিচ্ছি। এটা কলেজের কোন ব্যবসা নয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য এ গুলো প্রতিবছর প্রদান করা হয়ে থাকে। নওয়াপাড়া মডেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো: মহিদুল ইসলাম খানের (০১৭১২-৯৪২৩২৮) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হয় কিন্তু তিনি রিসিভ করেন নি।
এ ব্যপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোল্যা আমির হোসেন’র সাথে (০১৭১১-৫৩৫৪২১)মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।