অভয়নগর প্রতিনিধি
কোন সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হলো ভবদহ জলাবদ্ধবাসীর বহু প্রতিক্ষিত আমডাঙ্গা খালখনন প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর আঞ্চলিক অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ মুখার্জির আহবানে শুক্রবার বিকালে আমডাঙ্গা খালের ব্রিজের পাশে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পানি উন্নয় বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এবছর আগাম বর্ষা শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভবদহ এলাকায় ব্যাপক জল জমেেেছ। এখন খাল দিয়ে পানি নামছে। এ অবস্থায় খালে কাজ করা যাবে না। এছাড়া আর কি করা যায় সে বিষয়ে উপস্থিত সকলের কাছে তিনি মতামত ব্যক্ত করার আহবান করেন।
খাল পাড়ের বাসিন্দা মধু পাল বলেন, খালে তার বসত বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। অনেক কষ্টে তিনি ভাঙ্গন ঠেকাচ্ছেন। তার জমি অধিগ্রহন করতে হলে বসত বাড়ির দাগে যতটুকু জমি আছে সবটুকু অধিগ্রহন করতে হবে তা না হলে তিনি জমি অধিগ্রহন করতে দেবেন না। খাল পাড়ের আরো কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এই মুহুর্তে খালের মধ্যে কোন কাজ করা যাবে না। খালের ব্লক উঠালে বাড়ি ঘর ভেঙ্গে পড়বে তারা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে তাই তারা খাল সংস্কার করার জন্য কাউকে খালে না নামার জন্য মতামত ব্যক্ত করনে।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির অন্যতম নেতা অধ্যাপক অনীল বিশ্বাস সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতকারে বলেন, আমডাঙ্গা খাল সংস্কার করার জন্য পর্যপ্ত বরাদ্দ হয়েছে। ঠিকাদারও নিয়েগ হয়েছে কিন্তু তারা সময় মতো কাজটি করেনি। এখন খাল পানিতে ভরে গেছে এ অযুহাত দিয়ে খালে কাজ না করার পায়তারা করছে। তিনি আরো জানান গত কয়েক দিনের টানা বর্ষায় ভবদহ এলাকায় জলাবদ্ধতা শুরু হয়েছে। এ মুহুর্তে খাল খননের কাজ শুরু না করলে এলাকায় আবারো ভয়াবহ জলাবদ্ধত্ শুরু হবে। তাই তিনি দ্রুত খাল খননের কাজ শুরু করার আহবান করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী মো আসাদুজ্জামান পিয়াল জানান, বিশ^ ব্যাংকের অর্থায়নে “ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এন্ড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট” এর আওতায় “ভৈরব আফরা নিষ্কাশন উপপ্রকল্প” নামে আমডাঙ্গা খালটি প্রশস্তকরণ ও খননের জন্য ৪৯ কোটি ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ময়মনসিংহ জেলার ভাওয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রকশনকে যথা নিয়মে নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে ১৭ জুন ২০২৫ থেকে ২৬ জুন ২০২৬ তারিখ পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, পলি জমে টেকা, শ্রী, হরি নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় আশির দশক থেকে ভবদহ এলাকায় জলাবদ্ধতা শুরু হয়। কোন কোন বছর তা প্রকট আকার ধারন করে। বান ভাসি মানুষের মতো এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। তিন থেকে পাঁচ মাস ফসলের মাঠ ও বাড়ি ঘর জলে ডুবে থাকে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের আশায় ২০০৫ সালে তৎকালিন স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য এম এম আমিন উদ্দিন ভবদহ পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে আমডাঙ্গা খাল খনন করেন।কিন্তু রেল ও সড়কে দুইটি ছোট কালভার্ট থাকার কারনে তিনি খালে পানি প্রবহের ব্যবস্থা করতে পারেনি। পরে ২০০৬ সালে এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিলে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলে। ওই সময় সরকার আন্দোলনের চাপে রেল ও মহাসড়কে কালভার্ট ভেঙ্গে ব্রিজ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু খালিট পরিকল্পিত ভাবে খনন না করার কারনে পর্যপ্ত পানি নিষ্কাশিত হয়না।যে কারনে খালটি পুনঃ খননের দাবি উঠে।
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.