
অনলাইন ডেক্স
টানা ১২ দিনের ভয়াবহ সংঘাতের পর অবশেষে কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোতেও উভয় পক্ষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার খবর এসেছে। কিন্তু কি কি শর্তে কার্যকর হলো এই যুদ্ধবিরতি?
ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি
ইরান প্রথমে একতরফাভাবে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে। ১২ ঘণ্টা পরে ইসরায়েলও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ বলে ঘোষণা হবে।
সময়সীমা নির্ধারণ
ইরানকে স্থানীয় সময় সকাল ৪টার মধ্যে হামলা বন্ধ করতে বলা হয়েছে। ইসরায়েলও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সামরিক অভিযান বন্ধ করে।
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা
কাতার, ওমান ও সৌদি আরবের মাধ্যমে ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য। গালফ রাষ্ট্রগুলো মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে।
নতুন হামলা বন্ধের প্রতিশ্রুতি
যুদ্ধবিরতি চলাকালে কোনো নতুন ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা চালানো হবে না। দুই পক্ষই এই শর্তে সম্মত হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ আচরণ
দুই পক্ষকেই শান্তিপূর্ণ, উত্তেজনাবিহীন আচরণ বজায় রাখার শর্ত দেওয়া হয়েছে।
পরমাণু আলোচনা
ইরান পরমাণু আলোচনায় বসার পূর্বশর্ত হিসেবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দাবি তোলে। এই যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ পরমাণু আলোচনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১২ দিনের সংঘাতের পর ইরান ও ইসরায়েল অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প লেখেন, ‘সবাইকে অভিনন্দন! ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে, যার আওতায় আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এই সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষ তাদের চলমান চূড়ান্ত সামরিক অভিযান সম্পন্ন করবে। এরপর ১২ ঘণ্টা পর যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত বলে বিবেচিত হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে, ইরান প্রথমে যুদ্ধবিরতি শুরু করবে এবং ১২তম ঘণ্টায় ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে যাবে। ২৪তম ঘণ্টায় ১২ দিনের এই যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটবে। এই সময়ে উভয় পক্ষই একে অপরের প্রতি শান্তিপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল আচরণ করবে।’
ট্রাম্প তার পোস্টে বলেন, ‘আমি ইসরায়েল এবং ইরানকে অভিনন্দন জানাতে চাই- এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বন্ধের জন্য তাদের দৃঢ়তা, সাহস এবং বুদ্ধিমত্তা প্রশংসনীয়। এটি এমন একটি যুদ্ধ যা বছরের পর বছর ধরে চলতে পারত এবং গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিতে পারত, কিন্তু তা হয়নি এবং কখনো হবেও না!’
তিনি আরও লেখেন, ‘সৃষ্টিকর্তা ইসরায়েলকে আশীর্বাদ করুন, সৃষ্টিকর্তা ইরানকে আশীর্বাদ করুন, সৃষ্টিকর্তা মধ্যপ্রাচ্যকে আশীর্বাদ করুন, সৃষ্টিকর্তা যুক্তরাষ্ট্রকে এবং বিশ্বকে আশীর্বাদ করুন।’