
অনলাইন ডেক্স
গত কয়েকদিন ধরে যশোরে রোদের দেখা নেই। পৌষের হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু জনজীবন। দিনভর মেঘলা আকাশ ও কুয়াশাচ্ছন্ন চারপাশ। সেই সাথে বইছে হি-হি কাঁপুনি তোলা হিমেল বাতাস। আর এমন শীত-বৈরী আবহাওয়ায় উষ্ণতা ছড়াতে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে শীত নিবারণের উপকরণ বিতরণ শুরু করেছে ব্রাদার টিটোস হোমের (বিটিএইচ) শিক্ষার্থীরা। নিজেদের তৈরি হস্তশিল্প বিক্রির টাকায় কম্বল বিতরণ করছে।
সোমবার বিকেলে শহরের লালদিঘির পাড়ে স্কুলটির সামনে এই কার্যক্রম শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা এদিন রিক্সা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকসহ শ্রমজীবী মানুষের হাতে কম্বল তুলে দেয়।
ব্রাদার টিটোস হোম স্কুলের অধ্যক্ষ আলী আজম টিটো জানান, বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের বছরভর হস্তশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বাড়িতে বসে শিক্ষার্থীরা অসংখ্য ক্রাফটস্ তৈরি করে। তিনি বলেন, এখানকার ছোট ছোট বাচ্চারা কাগজ, শোলা, আইসক্রিমের কাঠি ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে দৃষ্টিনন্দন ‘ক্রাফট’ বানায়। যেগুলো বড়দেরও চমকে দেয়। শিশুদের তৈরি এসব শিল্পকর্ম নিয়ে প্রতিবছর আমরা একটি এক্সিবিশন করি।
ব্রাদার টিটো আরো জানান, গত ৬ ডিসেম্বর বার্ষিক হস্তশিল্প প্রর্দশনী ও বিক্রয় অনুষ্ঠিত হয়। এই আয়োজন থেকে শিশুরা তাদের হস্তশিল্প সামগ্রী ও নিলামে ১৪টি টিশার্ট বিক্রি থেকে ৩১ হাজার ৫০ টাকা উপার্জন করে। সেই টাকায় শীত নিবারণের উপকরণ কেনা হয়েছে। শিশুরা নিজ হাতে রিক্সা চালকসহ শ্রমিক শ্রেণির মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু করেছে।
রিক্সা চালক নজরুল বিশ^াস বলেন, শিশুরা তাদের নিজেদের উপার্জিত টাকায় আমাদের মতো শ্রমজীবী মানুষের হাতে কম্বল তুলে দিয়েছে। প্রচন্ড এই শীতের সময় কম্বলটি পেয়ে খুব উপকার হয়েছে।
ব্রাদার টিটো জানান, গত ৬ ডিসেম্বর স্কুলে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও বিক্রয় অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এই আয়োজনে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল কাজের পাশাপাশি মানবিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধ গড়ে তোলাই ছিল মূল লক্ষ্য। সংগৃহীত এই অর্থ সমাজের কল্যাণে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের মানবিক চেতনা জাগ্রত করার অংশ হিসেবে শীতার্ত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীদের টাকায় ১৪২টি কম্বল কিনে বিতরণ করা হয়েছে।

