
নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় নবগঙ্গা নদীতে অনুষ্ঠিত হলো আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা দেখতে নদীর দুপাড়ে হাজার হাজার দর্শকের ঢল নামে। প্রতিযোগিতায় নড়াইল, খুলনা ও গোপালগঞ্জ জেলা হতে আসা ৩টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকেই নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া খেয়াঘাট হতে কাঞ্চনপুর পর্যন্ত দু’কিলোমিটার জুড়ে নদীর দু’পাড়ে পাড়ে মানুষ জড়ো হতে থাকে। নড়াইল জেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখতে মানুষের আগম ঘটে। এদিন প্রায় সন্ধা পর্যন্ত চলে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
আয়োজক কমিটির সদস্য আসজাদুর রহমান মিঠু বিশ্বাস জানান, নবগঙ্গা নদীর কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে নৌকা ছাড়া হয়। দুই কিলোমিটার নদী পাড়ি দিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ হয় বারইপাড়া ঘাটে নির্মানাধীন সেতুর কাছে এসেছে। পয়েন্ট ভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় ৩বার অংশগ্রহণ করে প্রথম হয়েছে গোপালগঞ্জের সামাদ মুন্সীর নৌকা।
নৌকা বাইচ দেখতে আসা কালিয়ার ফসিয়ার বলেন, ‘নদী মাতৃক নড়াইল জেলায় নৌকা বাইচ হারিয়ে যেতে বসেছে। দীর্ঘকাল পর নবগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হলো। আমরা খুব আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি। আগামীতেও যেন এ ধারা অব্যাহত থাকে।’
নড়াইল শহর থেকে নৌকা বাইচ দেখতে যাওয়া নূর নবী সামদানী বলেন, আমরা বর্তমানে ফেসবুক, ইন্টারনেট ভিত্তিক বিনোদনে আসক্ত হয়ে পড়েছি। বহুদিন পর নৌকা বাইচ দেখতে গিয়ে সুন্দর একটি বিকাল অতিবাহিত করেছি। আমাদের মতো হাজার হাজার মানুষ নির্মল আনন্দ উপভোগ করেছে। বর্ষাকালে নড়াইল নদী ও বিলে এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী আয়োজন করার দাবি জানাই।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম। এসময় জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা আশিক ফারুক, কালিয়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু, সিনিয়র সহ-সভাপতি আসজাদুর রহমান মিঠু, কালিয়া পৌর বিএনপি সভাপতি শেখ সেলিম হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাই রাব্বী কামাল, সাবেক সদস্য সচিব শেখ মনিরুজ্জামান মনা, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সিহাব হোসেন সহ অনেকে।
আয়োজক জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন,‘আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা হারিয়ে যেতে বসেছে। মানুষ আজ আকাশ সংস্কৃতির দিকে ঝুকে পড়েছে। তরুন সমাজ মোবাইলে ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইন গেম সহ ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন সময় নষ্ট করছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এভাবে যদি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সরকারী দায়িত্বশীলরা ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এ ধরনের আয়োজন করতে পারে।’