অভয়নগরে অন্তঃসত্ত্বা সুমাইয়া আক্তার তমা হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের অভয়নগর উপজেলার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা সুমাইয়া আক্তার তমা হত্যার বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়ন পরিষদচত্ত্বরে এ দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার সাথে জড়িত উপজেলার কোটা গ্রামে সুজন, রুবেল ও ইকরামুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে বক্তব্য রাখেন তমার পিতা আব্দুল জলিল শেখ ও মাতা নাসিমা বেগম ।
জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই রাত ১২টার দিকে উপজেলার হাসপাতাল রোডের বাসাবাড়িতে সিলিংফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তমাকে ঝুলতে দেখে তার স্বামী রিয়াজুল ইসলাম সুজন প্রতিবেশিদের ডেকে মরদেহটি নামিয়ে হাসপাতালে রেখে সেখান থেকে সে পালিয়ে যান।
জলিল শেখ বলেন, উপজেলার কাদিরপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান শেখের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম শেখ সুজনের সাথে ২০২০ সালের ৩০জুন তমার বিবাহ হয়। মাত্র ছয়দিনপর সুজন তালাকের নোটিশ পাঠায়। ওই মাসের ১০ তারিখ প্রশাসনের সহযোগিতায় পুনরায় তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে সুজন, সুজনের মা কুমকুম বেগম, ও তমার ননদ রুনা খাতুন যৌতুকের দাবিতে তমার ওপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন চালাত। এরপর ছয়মাস উপজেলার হাসপাতাল রোডের ওয়াপদামোড়ে তারা বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। তমা ইতিমধ্যে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। কিন্তু সেখানেও চাচাত ভাই রুবেল শেখ ও মায়ের মদদে সুজন তমার উপর নির্যাতন শুরু করে। গত ঈদের আগে কুমকুম বেগম ও রুনা খাতুন ভাড়াবাড়িতে গিয়ে তমার কাছে ঈদ খরচ বাবদ বাপের বাড়ি থেকে দশ হাজার টাকা আনতে বলে। টাকা না দেওয়ায় গত ১৮ জুলাই রাত বারটার দিকে তমাকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে উপজেলা স্বাস্থকমপ্লেক্সে নিয়ে ফেলে রেখে সুজন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, ওই দিন রাত দেড়টার দিকে আব্দুল জলিল শেখ অভয়নগর থানায় গিয়ে মামলা করতে গেলে থানার এস আই উত্তম কুমার সুষ্ঠবিচারের আশ্বাস দিয়ে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরের দিন তিনি থানায় গিয়ে সুজনসহ তার মাতা কুমকুম বেগম, চাচাত ভাই রুবেল শেখ ও বোন রুনা খাতুনকে আসামি করে ‘হত্যা মামলা’ করার দাবি জানান। কিন্তু ওই এসআই তার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র ‘আত্মহত্যার প্ররোচণায়’ সুজনকে আসামি করে মামলা রেকর্ড করে। হত্যার তিনমাস গড়িয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নেইনি। তিনি বাকি তিনজনকে মামলার আসামি করে সুষ্ঠবিচারের দাবি জানান। তিনি জানান, আসামীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ এর ১১(ক)/৩০ ধারায় নালিশী দরখাস্ত দাখিল করা হয়েছে কিন্তু তার কেনো অগ্রগতি নেই।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, তমার মা নাসিমা বেগম, পিতা জলিল শেখ, স্থানীয় ইউপি সদস্য তুহিন শেখ, কামাল শেখ, সাবেক মেম্বর(সংরক্ষিত) রাফেজা বেগম, ওয়ার্ড আ.লীগ নেতা হাবিবুর রহমান, আবুল বাশার ও কোটা গ্রামের শতাধিক নারী পুরুষ ।