অভয়নগরে কথিত সাংবাদিক মাহাবুবুর এবার নিজে ধর্ষণ করে ভিডিও প্রকাশের অভিযোগে পুলিশের খাঁচায় বন্দি

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের অভয়নগর উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে অভয়নগর থানায় মামলা করেছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্মের হোতা মাহাবুবুর রহমান (৪০) ও একটি রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মী অনিক বাঘা (২৬) নামে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক মাহাবুবুর রহমান অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া গ্রামের বাশার মোড়লের ছেলে এবং অনিক বাঘা একই উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের নাসির বাঘার ছেলে।
মামলার এজাহারে স্কুলছাত্রীর মা উল্লেখ করেন, তার মেয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ছোটবেলা থেকে তার সাংবাদিকতা করার শখ। এটা জানতে পেরে মাহাবুবুর রহমান তাকে সাংবাদিক হিসেবে কার্ড তৈরি করে দেওয়ার প্রলোভন দেখান এবং তার ফেসবুক আইডি নেন। এরপর হঠাৎ একদিন মেসেঞ্জারে সাংবাদিকতার ফরম পূরণ করার জন্য মাহাবুবুর মেয়েটিকে চলিশিয়া গ্রামে তার মাছের ঘেরের বাসায় যেতে বলেন।
গত ২১ আগস্ট ওই মেয়ে মাহাবুবুরের ঘেরের টং ঘরে গেলে তিনি সেখানে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন মাহাবুবুর। এ ঘটনা কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেন তিনি। পরে ভিডিও ডিলিট করার কথা বলে মাহাবুবুর তাকে উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারের কাঁচাবাজারের পেছনের একটি স’মিলে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে মাহাবুবুর ও অনিক বাঘা তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ধর্ষণের ভিডিও মেয়েটির বাবা ও ছোট বোনের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠান মাহাবুবুর।
এছাড়া মাহবুর রহমান নওয়াপাড়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ সালাউদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে প্রতারনা করে ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সালাউদ্দিন ওই টাকা আদায়রে জন্য পুলিশ প্রশানের দারস্থ হলে মাহাবুবুর উল্ট পলিশের উর্দতন কর্মকতার কাছে তাকে হয়রানির অভিযোগ তুলে আবেদন করে। বিষয়টি নিয়ে দুই বছর যাবৎ এলাকায় অনেক সালীশ বিচার করে টাকা টাকা আদায় করতে পারেনি সালাউদ্দিন। অবশেষে ওই ব্যবসায়ী ১৩ লাখ টাকার দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
অভয়নগর থানার ওসি একেএম শামীম হাসান বলেন, স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ করে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত মাহাবুবুর রহমান ও অনিক বাঘাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ওই স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ২২ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।