ঝিকরগাছার প্রধান শিক্ষক নাসিরের খুঁটির জোর কোথায় !
ক্রমাগতই চলছে শিক্ষার্থী নির্যাতন : শিক্ষকের লাথিতে শিক্ষার্থী অসুস্থ
আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের নোয়ালী গ্রামের নোয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের খুঁটির জোর কোথায়! এই নিয়ে জনমতে মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন উদিয়মান হতে দেখা গেছে। ক্রমাগতই চলছে প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের শিক্ষার্থী নির্যাতন। তবুও তিনি খ্যান্ত হননি তার লাথিতে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরবর্তীতে যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। সে ঐ এলাকার মনিরুল ইসলাম ও আমেনা বেগম দম্পতির ১১বছরের কন্যা এবং উক্ত বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ঘটনার বিষয়ে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল বুধবার প্রতিদিনের ন্যায় নোয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস চল ছিলো। প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন পঞ্চম শ্রেণির অংক ক্লাস নেওয়ার জন্য ক্লাসরুমে উপস্থিত হয়ে সকল শিক্ষার্থীদেরকে দুইটা অংক করতে দেন। একটি মেয়ের দুইটা অংকই ভূল হয়। এরপর প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের মাথায় রাগ চেপে বসে। এ থেকে ঐ মেয়েকে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে হাত দিয়ে এলোপাথাড়ী চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক তার রাগ চেক দিতে না পেরে শিক্ষার্থীকে ক্লাস রুমের ভিতর থেকে জামা ধরে টানতে টানতে সামনে আনতে থাকে। এমন সময় বেঞ্চির একটি কোনা লেগে শিক্ষার্থী মাটিতে পড়ে গেলে তার উপর আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী শ্রেণি কক্ষে প্রসাব করে দিয়েও রক্ষা পাননি। তারপর স্বার্থপর প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন তাকে পরপর দুটো লাথি মারেন। এরপর শিক্ষার্থী শ্রেণি কক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কাউ কে কোন কিছু না বলা শর্তে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ঘটনার বিষয়ে বিষয়ে সংবাদকর্মীরা তথ্য অনুসন্ধানে রবিবার (০৪ মে) সকালে স্কুলে উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীরা এ তথ্য প্রকাশ করেন।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনে প্রায় দিনই তাদের উপর নির্যাতন করেন। কোন শিক্ষার্থী পড়া বুঝতে না পারলেও তার ভয়ে কোন শিক্ষার্থী সেটা প্রকাশ করতে সাহস পায় না।
অসুস্থ শিক্ষার্থীর মাতা আমেনা বেগম বলেন, আমি দীঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছি। তারপরও প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের দ্বারা আমার মেয়ে নির্যাতনের স্বিকারের কারণে আমরা পারিবারিক ভাবে খুবই অস্বস্তির মধ্যে আছি। আমার চিকিৎসার টাকা আমার মেয়ের জন্য খরচ করতে হয়েছে। আমার মেয়ে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে পড়ে থাকলেও প্রধান শিক্ষক কোন খোঁজ খবর নেননি। একপর্যায়ে তিনি এলাকার বিভিন্ন নেতাকর্মীদের দিয়ে মিমাংশা করে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি আমার মেয়ের প্রতি ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিচার চাই।
প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, আমি শিক্ষার্থীকে মারিনি। আমাকে ফাসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তখন তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ওটা শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে সাজানো হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেহেলী ফেরদৌস বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি জানামাত্রই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তবে তিন দিন বন্ধ থাকার পর আজকে অফিস চলাকালীন সময়ে তদন্ত কমিটি আজকের মধ্যে তদন্ত করে তাদের প্রতিবেদন জমা দিবেন। এরপর বিষয়টির নিয়ে আমি আমার উদ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট তদন্ত প্রতিবেন প্রেরণ করবো। আমার উদ্ধতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আমি আশাবাদি।