হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী পাচঁনামনার লোকমান মানেই চৌগাছার আতঙ্ক

চৌগাছা(যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় সাধারন জনগনের আতঙ্কের নাম “লোকমান হোসেন ওরফে লোকমান”। চৌগাছা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড পাচঁনামনা গ্রামের মৃত শুকুর বিশ^াসের ছেলে লোকমান দুটি হত্যা, ডাকাতি,বিস্ফোরকসহ ৯টি মামলার আসামী ও বিএনপির চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী। এই লোকমান মানেই তান্ডব আর খুনের আতঙ্ক,এমনটাই অভিযোগ চৌগাছা পৌরবাসির। শুধু সাধারন মানুষ কেনো নিজ দল বিএনপির মধ্যেও আতঙ্ক এই লোকমান। লোকমান ও তার ভাই পৌর কাউন্সিলর সাইদুল এবং তার পরিবারই চৌগাছা উপজেলা বিএনপির ভাগ্য বিধাতা বলেই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
১৫ই ফেব্রƒয়ারি (সোমবার) সেই কথাটিই আবার জনসাধারনকে স্মরন করিয়ে দিলেন এই সন্ত্রাসী লোকমান তিনি। ১৯৯৫ সালে উপজেলার পীল বলুহ দেওয়ানের মেলায় চাঁদাবাজি ও লুটপাট করছিল লোকমান ও তার বাহিনী। এসময় স্থানীয়রা বাধা দেয়। সাথে সাথে তাদের উপরে বোমা হামলা চালায় লোকমান ও তার বাহিনী। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সিরাজুল নামে একজন। ৯১ থেকে ৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত লোকমান ও তার বাহিনীর নাম শুনলেই ভয়ে অস্থির ভয়ে পালিয়ে যেতেন সকলে। সেই সময়ের এমনকি এখন পর্যন্ত নিজের ভাবমূর্তি ধরে রেখেছে এই লোকমান। সাবেক সর্বহারা পার্টির নেতা দাউদ হোসেন (যিনি এখন স্থানীয় ইউপি সদস্য) এবং বড় খানপুর গ্রামের ময়না ডাকাত ছিলেন লোকমান বাহিনীর সদস্য। ডাকাতি, বিস্ফোরক, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ এমন কোন মারাতœক মামলা বাকি নেই যা তার বিরুদ্ধে থানায় হয়নি। সন্ত্রাসী লোকমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা সমুহ চৌগাছা থানার হত্যা মামলা নং- ০২(৯)৯৫ এবং ০৫(৯)৯৫, ডাকাতি মামলা ১৪(৮)১২,অস্ত্র মামলা ১৬(৫)৯৯, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ১৩(২)৯৮, অপহরন ও চাদাবাজি ৮(২)৯৯, বিস্ফোরক ৮(৩)১৩, বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-বি ১২(৯)০৫, এছাড়াও আছে মামলা নং ৮(২)৯৯ নং মামলা।
১৪ই ফেব্রুয়ারি পুনরায় পৌর কাউন্সিলর নির্বাচীত হয়েছেন সন্ত্রাসী লোকমানের ভাই সাইদুল। পরের দিন সকালে স্থানীয় একটি দোকানে বিদ্যুৎ বিল দিতে যাওয়া মধ্যবয়সি ভদ্র মহিলা, চৌগাছা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি বাবুলের মাকে আক্রমন করে লোকমান। সেখানে বাবুলের মায়ের পেটে লাথি মেরে অকথ্য ভাষায় গালামন্দ করে লোকমান বলে,“—- তোর ছেলেকে আমার কাছে হাজির করে দে”। তখন তিনি ছেলের অপরাধ জানতে চাইলে লোকমান আরো বিশ্রী ভাষায় গালমন্দ করে বলে, “যে পেটে তোর ছেলেকে জন্ম দিয়েছিস সেই পেট ফাটিয়ে দেবো। ছেলে হাজির কর না, হলে যেখানে পাবো সেখানেই মেরে ফেলবো।” কান্না জড়িত কন্ঠে জানালেন তিনি। অন্য একজন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মন্টুর শ^শুরকে ডেকে এই লোকমান বলেছেন,“তোর জামাই কই? —-’র হাত পা ভেঙ্গে ফেলা হবে”।
উল্লেখ্য ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল চৌগাছা পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ড থেকে বিএনপি নেতা ও একাধিক মামলার আসামী সাইদুলের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন চৌগাছা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বকুল হোসেন। ভোটে ১০৮ ভোটে পরাজিত হন বকুল। ভোটের বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিল এই লোকমান। ভোটের দিন সকাল থেকেই কোমরে অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী সমর্থকদের হুমকি ধামকি দিচ্ছিলেন তিনি বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। ভোটের ফলাফল ঘোষনার সাথে সাথে বিজয় মিছিলেও ছিলো বিএনপির চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীরা। মিছিল শেষে এলাকায় ফিরে এসে স্বমূর্তি ধারন করে লোকমান ও তার বাহিনী। দুটি হত্যা,ডাকাতি,নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ৯টি মামলা থাকলেও পূর্ন নিরাপত্তার মধ্যেই থাকেন তিনি। কিভাবে??
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবুলের মায়ের উপর হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসী লোকমানসহ ৪/৫ জনের নামে চৌগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিউটি অফিসার এএসআই সাইদুর রহমান।
০১৭৭০৬৫৪৫৪৬